ভারতের রাজধানী দিল্লিতে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনরোদ্ধারে দিল্লির প্রশাসন সেনাবাহিনীর জরুরি সহায়তা চেয়েছে।
রাজ্যটির হাসপাতালগুলোর আইসিইউ শয্যা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে, এখন দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের তীব্র সংকট।
এ অবস্থায় করোনা রোগীদের সেবায় জরুরিভিত্তিতে আইসিইউ ইউনিট তৈরি করতে সেনাবাহিনীর এ সহায়তা চাওয়া হয়।
দেশটিতে টানা দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছে ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি।
করোনার ভয়াবহতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই ছাড়িয়ে যাচ্ছে শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।
সারাবিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১০ হাজার ৬৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭৬৭ জন।
ভারত ও ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশ এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে বিপর্যস্ত।
বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন মোট ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৭৭ হাজার ৩৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩২ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৮ জন।
করোনার আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুসারে, বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৫৬১ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৯১ হাজার ৫১৪ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯ হাজার ৩৯৩ জন।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় এর পরেই রয়েছে ভারত। গত কয়েকদিন ধরে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৩ জনের। মোট মৃত্যু বেড়ে দাাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৩৮৩। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭০৩ জন।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪ লাখ ৮ হাজার ৮২৯ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৬ জন।
চতুর্থ স্থানে থাকা ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ৭ জন রোগী। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ৫ হাজার ১৩০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪৬ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৪ জন।
শনাক্তের দিক দিয়ে এখন পঞ্চম স্থানে তুরস্ক। দেশটিতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৪৯ লাখ ১২১ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪১ হাজার ১৯১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ৮১৯ জন। এ ছাড়া তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রাশিয়া, সপ্তম স্থানে যুক্তরাজ্য, অষ্টম স্থানে ইতালি, নবম স্থানে স্পেন এবং দশম স্থানে রয়েছে জার্মানি।
সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম। দেশে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬৮২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১১ হাজার ৬৪৪ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬ লাখ ৯১ হাজার ১৬২ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশটিতে করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।সূত্রঃ যুগান্তর।