ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের শুধুই সনদের স্বীকৃতি দিয়ে সরকার তার দায় শেষ করতে পারেনা। শিক্ষার্থীদের সনদের স্বীকৃতির যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সাথে দারুল উলুম দেওবন্দ, নদওয়া, দারুল উলুম করাচি, মদিনা ও আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহির্বিশ্বে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের ব্যাপারে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
আজ ১৪ মার্চ’২১ রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন তিনি।
ছাত্রনেতা নূরুল করীম আকরাম আরো বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদেরকে দূরে রেখে দেশের টেকসই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। কওমি শিক্ষার্থীদের মেধাগুলো যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে পারলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ তার বক্তব্যে বলেন, কওমি সনদের স্বীকৃতি ছিল একটি আইওয়াশ মাত্র। ঘোষণার ৪ বছর হতে চললো। কিন্তু স্বীকৃতির যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারের কোন ধরণের সদিচ্ছা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এখনো শিক্ষা জরিপে কওমি শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে জরিপ প্রকাশ করা হয়। এটি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য লজ্জার। স্বাধীনতার পর থেকেই সব সরকারের আমলেই কওমি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ছিল।
এসময় কওমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরকারের প্রতি ৭ দফা দাবি জানান ইশার কেন্দ্রীয় সভাপতি আকররাম।
দাবিগুলো হলো
এক. কওমি সনদের স্বীকৃতি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
দুই. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা জরিপসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রমে কওমি শিক্ষাধারাকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
তিন. কওমি মাদরাসার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা বজায় রেখে কওমি শিক্ষার্থীদেরকে ধর্মীয় ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরসমূহে চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।
চার. মুতাওয়াসসিতা ( হেদায়াতুন্নাহু) ও সানুভিয়া (শরহে বেকায়া) কে যথাক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং মেশকাত কে বিএ অনার্স এর সমমান দিতে হবে।
পাঁচ. দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরকে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমপিল ও পিএইচডির সুযোগ দিতে হবে এবং দারুল উলুম দেওবন্দ, নদওয়াতুল উলামা সহ বহির্বিশ্বে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ছয়. রাষ্ট্রের বার্ষিক বাজেটে কওমি শিক্ষা কার্যক্রম ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিতে হবে।
সাত. মেধাবী ও তুলনামূলক অসচ্ছল কওমি শিক্ষার্থীদের সরকারী-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে কওমি শিক্ষার্থীদের মেধাকে সার্বজনীন ও দেশের অগ্রগতির অন্যতম মূল উপাদান হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ রাষ্ট্রেকেই গ্রহণ করতে হবে।
ইশার কেন্দ্রীয় কওমি মাদরাসা সম্পাদক মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় আয়োজিত মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল গাজী মুহাম্মাদ ওসমান গনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম শোয়াইব, প্রশিক্ষণ সম্পাদক ইউসুফ আহমাদ মানসুর, তথ্য গবেষণা সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, প্রচার ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক নূরুল বশর আজিজী, প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মাদ ইবরাহীম হুসাইন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক এম এ হাসিব গোলদার সহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও নগর নেতৃবৃন্দ।