জোরপূর্বক জমি দখল করে হাউজিং এস্টেট গড়ে তোলা, জমিদাতাদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দেয়া, রেজিস্ট্রি খরচ ৩/৪ গুণ বাড়িয়ে নেয়ার প্রতিবাদে উত্তরা রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লি. এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে একাধিক ভুক্তভোগী পরিবার। আজ (শনিবার) সকাল ১১টায় রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর খালপাড় সংলগ্ন রূপায়ন সিটি গেটের সামনে এই মানববন্ধন আয়োজিত হয়। এতে অংশ নেয় একাধিক ভুক্তভোগী পরিবারসহ প্রায় সহস্রাধিক এলাকাবাসী।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রূপায়ন কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনা সরকারের স্বেরাচারি শাসনামলের পুরোটা জুড়ে আমাদের সঙ্গে নানারকম ছলচাতুরি করে আসছে। আমরা পনের/বিশ বছর আগে রূপায়নের সাথে জমি জয়েন্ট ভেঞ্চার (যৌথ মালিকানা) করলেও তারা এখনো আমাদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়নি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখা ভুক্তভোগী সুরুজ্জামান বলেন, রূপায়ন কর্তৃপক্ষ আমাদের অনেক ফ্ল্যাট মালিককে এখনো রেজিস্ট্রি দেয়নি তারা। সেক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রি খরচ ৩/৪গুণ বেশি দাবি করছে রূপায়ন কর্তপক্ষ। এসবের প্রতিবাদ করলে উত্তরা রূপায়ন সিটির চেয়ারম্যান এল.এ মুকুলের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগও কেটে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, জমিদাতা হিসেবে আমি রূপায়নের কাছে বিশটি ফ্ল্যাট পাই এবং আমার ভাই বিশ বিঘা জমির বিপরীতে টাকা পায়। রূপায়ন কর্তৃপক্ষ হাসিনা সরকারের ভয় দেখিয়ে এতদিন আমাদেরকে বঞ্চিত রেখেছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ভুক্তভোগী মোস্তফা জামান জানায়, রূপায়ন কর্তৃপক্ষ আমাকে জমির মূল্য হিসেবে দুই কোটি তেত্রিশ লক্ষ টাকার চেক দিয়েছিল। কিন্তু, সেই চেক নগদায়ন না হওয়ার কারণে আমি মামলা করেছি। পরে সেই মামলায় দশ বছর পর আমি জিতেছি।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে রূপায়ন হাউজিংয়ের মালিক মুকুল আমার কাছ থেকে জমি লিখিয়ে নিতে আমাকে তাৎকালীন ডিজিএফআই সাবেক ডিজি জেনারেল (অব.) আবেদীনের মাধ্যমের আমাকে উঠিয়ে নিয়ে রূপায়নকে জমি লিখে দেয়ার জন্য বলেছিল। তা না হলে আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।
এ সময় বক্তারা আরো বলেন, উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন রূপায়ন আবাসন প্রকল্পের ভেতর সরকারি খাস জমি দখল করে ফ্ল্যাট বানিয়ে কোটি কোটি টাকায় সেসব ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রূপায়ন সিটি কর্তপক্ষ আদালনের নির্দেশনা কোনরূপ তোয়াক্কা করছে না।
মানববন্ধনে উপস্থিত অপর এক ব্যক্তি জানায়, ভুক্তভোগী জমি ও ফ্ল্যাট মালিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা রূপায়ন র্কৃপক্ষের সাথে এর আগেও বসেছি। কিন্তু, তারা দিব-দিচ্ছি বলে সবাইকে ঘুরাচ্ছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের উচিত এর সুষ্ঠু বিচার করা।
বক্তারা আরো বলেন, রূপায়ন সিটির চেয়ারম্যান মুকুল শেখ হাসিনা সরকারের সহচর হিসেবে পরিচয় দিয়ে গত ১৫ বছর এই এলাকার অনেক মানুষের জমি দখল করে রূপায়ন সিটি গড়ে তুলেছে। সে দুই দুই বার আওয়ামী লীগের হয়ে এমপি নির্বাচনে নমিনেশন চেয়ছিল। শেখ হাসিনার প্রভাব খাটিয়ে এলাকার অনেক মানুষের জমি জোর-দখল করেছে সে। মানবন্ধনকারীরা এসময় রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লি. এর চেয়ারম্যান মুকুল ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও নিজেদের ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন।