বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ওরা নিজেরাও জানে এই টিকা ‘দুই নম্বর’। এই টিকার কার্যকারিতা নেই। এদের মতো নাটক আর কেউ করতে পারবে না। বড় বড় অভিনেতা রাজ্জাক, অমিতাভ বচ্চন এরা সব ফেল আওয়ামী লীগের কাছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব অসুস্থ নেতাকর্মীর রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যারা বিনাভোটে মন্ত্রী-এমপি কিংবা মেয়র হন তাদের মধ্যে কোনো মানবতা থাকে না। ন্যূনতম সংস্কৃতিবোধ থাকে না। তারা সবসময় মানুষের সঙ্গে গুণ্ডা-মাফিয়ার মতো আচরণ করে। জাতির এই অন্ধকার দুঃসময়ে গুণ্ডারা এখন মেয়র হয়, মাফিয়ারা হয় মন্ত্রী।’
রিজভী বলেন, ‘ঘর থেকে বের হলে কেন যেন পরিচিত একটি দেশে বাস করছি বলে মনে হয় না। একটা স্বাভাবিক পরিবেশের মধ্যে আমরা আছি বলে মনে হয় না। গাড়িতে যখন আসি ডান দিকে বাম দিকে সবসময় উঁকি দিই। মনের মধ্যে আতঙ্ক থাকে, গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে বের করে ফেলবে কিনা বা গাড়ির ওপর আক্রমণ করবে কিনা? অথবা সিএনজিতে আছি, সিএনজি থামিয়ে আমাকে অদৃশ্য করে দেবে কিনা? এসব আতঙ্ক এসব ভয় আমাদের প্রতিনিয়ত গ্রাস করে চলে।’
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষনেতা আরও বলেন, ‘করোনা টিকার ব্যাপারে আমরা এমনই এমনই বিরোধিতা করিনি। আন্তর্জাতিক নিউজ এজেন্সি রয়টার্স বলেছে— বাংলাদেশে ভারত যে টিকা পাঠাচ্ছে সেটি ট্রায়াল করার জন্য পাঠাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা গবেষণাগারে তেলাপোকা, ব্যাঙ কেটে এর ইন্টারনাল এনাটমি জানতাম। ঠিক তেমনই আমাদের ল্যাবরেটরির ব্যাঙ হিসেবে গণ্য করছে ভারতের নীতিনির্ধারকরা। আর এ কারণেই তারা এখানে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা পাঠিয়েছে। তারা ভেবেছে- ‘দেখি এই টিকায় বাংলাদেশে কত লোক মারা যায়, তার পর আমরা আমাদেরটা দেব।’
রিজভী বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, অন্য দু-একটি দেশে যেখানে ভারত টিকা দিয়েছে, সেখানে কিন্তু টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। নতজানু সরকার থাকলে, আত্মসমর্পণকারী সরকার থাকলে তারা এগুলোর কিছুই পরোয়া করে না। তারা প্রহসন করছে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি ভ্যাকসিন নিয়েছেন। কীভাবে নিয়েছেন, সেটা কিন্তু তিনি জানাননি। গতকাল, গত, পরশু দিন— ওই যে গাজীপুরের মন্ত্রী আছেন না আ ক ম মোজাম্মেল হক (মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী), তার ওখানে সিরিঞ্জ দেখানো হয়েছে; কিন্তু তা পুশ করার কোনো ছবি নেই। কারণ ওরা নিজেরাও ভীত-সন্ত্রস্ত। ওরা নিজেরাও জানে এই টিকা ‘দুই নম্বর’। এই টিকার কার্যকারিতা নেই। এদের মতো নাটক আর কেউ করতে পারবে না। বড় বড় অভিনেতা রাজ্জাক, অমিতাভ বচ্চন এরা সব ফেল আওয়ামী লীগের কাছে।
রিজভী বলেন, আমাকে অনেক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছেন- আপনি টিকা নেবেন কিনা? আমি বলেছি— ন্যায়সঙ্গতভাবে আমি যে টিকার বিরোধিতা করেছি, বাঁচি আর মরি ওই টিকা আমার শরীরে প্রবেশ করতে দেব না। আমি আমার কথা রেখেছি।
আয়োজক সংগঠনের সদস্য ও বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়চৌধুরীর সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।