ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খোমেনী বলেছেন, তার দেশ পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে নিজের যৌক্তিক অবস্থান থেকে সরে আসবে না এবং প্রয়োজন হলে শতকরা ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে।
তিনি সোমবার সন্ধ্যায় ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় এ ঘোষণা দেন।
ইরান এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে এবং ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় এই মাত্রা সাড়ে তিন ভাগ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি ইরান আবার ২০ মাত্রায় সমৃদ্ধকরণ শুরু করেছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে শতকরা ৯০ ভাগ বা তার বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রয়োজন হয়। তেহরান বলেছে, ইসলামের সুমহান দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে দেশটি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না।
সোমবারের ভাষণে ইরানের এই নীতি অবস্থানের কথা আবারও তুলে ধরেন আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী।
তিনি বলেন, “পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রসহ যেসব অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে গণহারে হত্যা করা যায় সেসব অস্ত্র তৈরিতে ইসলামের বিধিনিষেধ রয়েছে এবং আমরা সে বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। ”
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের দু’টি শহরে আমেরিকার পরমাণু বোমা হামলায় দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ হত্যার কথা স্মরণ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “নিরপরাধ মানুষের ওপর গণহত্যা চালানো পশ্চিমাদের পাশবিক মানসিকতা থেকে উৎসারিত। কিন্তু ইরান এই মানসিকতায় বিশ্বাস করে না।”
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “এখানে মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদী চক্র বারবার বলে আসছে ‘আমরা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেব না। ’ তাদের জেনে রাখা উচিত ইরান যদি পরমাণু অস্ত্র তৈরির করা সিদ্ধান্ত নিত তাহলে ইহুদিবাদীরা তো দূরের কথা তাদের চেয়ে বড় শক্তিগুলোর পক্ষেও তা প্রতিহত করা সম্ভব হতো না। ”
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “প্রকৃতপক্ষে পরমাণু অস্ত্র নিছক একটি অজুহাত। আমাদের কাছে সাধারণ মানের কোনও সমরাস্ত্র থাকুক তাও তারা চায় না। কারণ, তারা ইরানকে আত্মরক্ষার অধিকার দিতেই রাজি নয়।”