বিশ্ব ডিম দিবস প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার উদযাপিত হয়। ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা ৮০। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত প্রভৃতি দেশসহ সারা বিশ্বের ৪০টি দেশে পালিত হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’, যার পরিধি ও ব্যাপ্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ অ্যানিমেল অ্যাগ্রিকালচার সোসাইটি (বিএএএস) ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়। একই বছরের ১১ অক্টোবর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পালন করা হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’, যা ছিল ১৮তম বিশ্ব ডিম দিবস। সেই থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপন হয়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের ডিমশিল্পের উন্নয়নে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দিবসটির গুরুত্ব অনুধাবন করে ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন ও এফএওর তত্ত্বাবধানে এবং সহযোগিতায় সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যেমন বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প কেন্দ্রীয় কমিটি (পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল-বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ অ্যানিমেল অ্যাগ্রিকালচার সোসাইটি সহ অনেক সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকাসহ সবগুলো বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে উৎসাহের সঙ্গে দিবসটি নিয়মিত পালন করে আসছে।
প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ডিমের গুরুত্ব এবং সাধারণের মাঝে ডিম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস। পুরো বিশ্বেই এ দিনটি একসঙ্গে উদ্যাপিত হবে বলে জানা গেছে।
‘সুস্থ মেধাবী জাতি চাই, প্রতিদিনই ডিম খাই’ স্লোগান সামনে রেখে ২৪তম এই ডিম দিবস পালিত হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস), বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা সম্মিলিতভাবে সারা দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা শহরে শোভাযাত্রা, এতিমখানা ও স্কুলের শিশুদের মাঝে ডিম বিতরণসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যানুযায়ী, বছরে একজন মানুষের ন্যূনতম ১০৪টি করে ডিম খাওয়া উচিত। এদিকে ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে চাহিদার তুলনায় ডিমের উৎপাদন বেশ কম।
বিপিআইসিসির দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিদিন দেশে সাড়ে চার কোটির বেশি ডিম উৎপাদন হচ্ছে। জানা গেছে, মানুষকে ডিম খাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয় এই দিবসটিতে। অথচ যখন এই দিবসটি পালন করা হচ্ছে, তখন ভোক্তাদের চড়া দামে ডিম কিনে খেতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে প্রতি ফার্মের ডিমের হালির দাম ৩৮-৪০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাড়তি চাহিদা পূরণ করতে না পারায় বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।