জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গত বন্যায় ও চলতি মৌসুমে ভারী বর্ষণে শিশুয়া বাঘমারা সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যান চলাচল ব্যহত হচ্ছে। চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। সংযোগ সড়কটির কাজ না হওয়ায় এবার হুমকির মুখে রয়েছে সেতুটিও। জরুরি ভিত্তিতে সংযোগ সড়কের কাজ করে সেতুটি রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার আরামনগর বাজার প্রধান সড়ক থেকে সাতপোয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও সরাসরি মাদারগঞ্জের সাথে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। সড়কটিতে ঝারকাটা ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত শিশুয়া বাঘমারা সেতু। সেতুর পশ্চিম পাশের সড়কটি ২০২০ সালের বন্যায় ভেঙে গিয়ে সাতপোয়া ইউনিয়নসহ মাদারগঞ্জ, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের প্রায় ৫০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের সরিষাবাড়ীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেই থেকে ওই সব এলাকার মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসলাদি সরিষাবাড়ীর বাজার ও বিভিন্ন শহরে নিয়ে আসতে দুর্ভোগে পড়ে।
স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক একটি বরাদ্দ দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলেও বর্ষা মৌসুমে সংযোগ সড়ক ভেঙে সেতু হুমকির মুখে রয়েছে। সেতুর সাথে রাস্তাটি মাটি দিয়ে কিছু অংশ ভরাট হলেও যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একাধিক বার কয়েকটি মালভর্তি ট্র্যাক পড়ে গিয়ে জান মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মালভর্তি কোনো যানবাহন নিয়ে সেতুর ওপরে উঠা-নামা করতে গেলে ধাক্কা দিয়ে উঠাতে হয়। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার ও বৃহস্পতিবার আরামনগর বাজারের দিন ওই সেতুর দুই পাশে সার্বক্ষণিক জটলা লেগেই থাকে।
স্থানীয় শিশুয়া গ্রামের করিম ও বাগমারা গ্রামের সোজল উদ্দিন সহ অনেকেই জানান, গত বন্যায় সেতুর পশ্চিম পাশের রাস্তা ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে এলাকাবাসী স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বাশের সাঁকো নির্মাণ করে সেতুর সাথে সংযোগ স্থাপন করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এখানে প্রায় সময় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে রাস্তাটি হুকমির মুখে বন্যা আসলেই আবারও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাতপোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অনেক কর্মকর্তা ভাঙা স্থান পরিদর্শন করেছেন। এলজিইডি’র ১০ লাখ টাকা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করেছে জানতে পেয়েছি। এর সঠিক কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। এডিপি থেকে ২ লক্ষ টাকার জিও ব্যাগ ভর্তি বালিসহ কয়েক ধাপে ৯ হাজার বস্তা বালি ফেলা হয়েছে। এসব দিয়ে তেমন কোনো কাজে আসবে না। বন্যা আসার আগে জরুরি ভিত্তিতে ওই সেতুর সাথে সংযোগ একটি বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হলে শঙ্কা কেটে যাবে।’
উপজেলা প্রকৌশলী রকিবুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্যায় সেতুর সংযোগ রাস্তা ভাঙার পর গত অর্থ বছরে ৮ লাখ টাকা এবং এডিপি থেকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে বালি ফেলা হয়েছে। সেতুটি হুমকির মুখে, জনসাধারণের চলাচলের জন্য সাঁকোর ব্যবস্থা করা হবে। ওই খানের মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। শুকনো মৌসুমে সেতুর একটি স্প্যান বর্ধিত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।’