নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অন্ধকারাচ্ছন্ন পুরোনো এক হোটেলের দ্বীতিয় তলায় বৈঠক বসতে অসম্মতি জানালে সেবা প্রত্যাশী এক নারীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করার অভিযোগ উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রতন মিয়ার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী সেতারা বেগম (৫৭) উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আকবর হাজী বাড়ির মৃত আবুবক্কর ছিদ্দিকের স্ত্রী।
গত শনিবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার প্রধান গেইটে এ ঘটনা ঘটে। বাদীনির সাথে এমন আচরণে প্রত্যক্ষদর্শী এবং সাধারণ মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, ৭ মাস আগে তার ছেলে নুরনবীকে (২৭) প্রতারণা করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সৌদি নিয়ে ৪লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের মেহের আলী কামলা বাড়ির সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলাম। কথা ছিল সাইফুল সৌদি নিয়ে আমার ছেলেকে আবাসিক হোটেলে চাকরি দিবে। বেতন হবে ১হাজার ৮০০শত রিয়াল। কিন্তু তিন মাস একটা রুমে রাখে চাকরি না দিয়ে। গত ৭ মাসেও সে আমার ছেলেকে কোন চাকরি দিতে পারেনি। একপর্যায়ে আকামা করার জন্য পুনরায় ১হাজার রিয়াল নেয়। এখানেও সাইফুল প্রতারণা করে আমার ছেলেকে খুরুজ লাগানো আকামা দেয়।
তিনি আরো জানান, এসব প্রতারণার অভিযোগ তুলে গত ১৫-২০ দিন আগে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে বিবাদী করা হয় সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলামের মা-বাবা ও স্ত্রীকে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি এ অভিযোগের তদন্ত করার দায়িত্ব দেন এসআই রতনকে। সমস্যার সমাধান করতে রতন আমাদের কাছে ৫হাজার টাকা দাবি করে। পরে তাকে ২হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকী টাকা পরে দেওয়ার কথা হয়।
ভুক্তভোগি আরও বলেন, গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে এসআই রতন বলেন থানায় কোন বৈঠক হবেনা, বৈঠক হবে বসুরহাট বাজারের হক হোটেলে। এ নিয়ে অভিযোগকারী নারী রোঁস্তোরায় গিয়ে বৈঠকে বসতে অস্বীকৃতি জানালে এসআই রতন ওই নারীকে বিশ্রী ভাষায় প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষের সামনে গালমন্দ করে। যা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সেতারা বেগম বলেন,মা বোন আপনাদের ও আছে,রতন আমাকে রাস্তায় দাড় করিয়ে যেভাবে সবার সামনে গালাগাল করেছে আমার ইচ্ছে করেছিলো মাটি ফেটে মাটির নিচে চলে যাই। পুলিশ যদি এমন আচরণ করে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কোম্পানীগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রতন মিয়ার মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাদেকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,তাকে কোম্পানীগঞ্জ থানা থেকে চলে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।