চীনে আটক গং অনুশীলনকারী, উইঘুর, তিব্বতবাসী, মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মতো সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক ‘অঙ্গহানি’ করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের (ওএইচসিএইচআর) পক্ষ থেকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে এসব বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ওএইচসিএইচআরের বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেন , তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে যে আটক থাকা জাতিগত, ভাষাগত অথবা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম্ভবত তাদের অনুমতি ছাড়াই জোরপূর্বক রক্ত পরীক্ষা এবং আল্ট্রাসাউন্ড ও এক্স-রের মতো অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কারাগারে আটক অন্যান্যদের এ ধরনের কোনো পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে না।
বিবৃতিটিতে আরো বলা হয়, ‘কারাগারে আটক জাতিগত, ভাষাগত অথবা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম্ভবত নিশানা করছে চীন। বেশিরভাগ সময়ই এদেরকে গ্রেপ্তারের কারণ ব্যাখ্যা করা হয় না অথবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও থাকে না। জাতিগত অথবা ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে এসব কারাবন্দি অথবা আটককৃতদের বৈষম্যমূলক চিকিৎসা নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
অভিযোগ রয়েছে, কারাবন্দিদের শরীর থেকে হৃদযন্ত্র, কিডনি, যকৃত, কর্ণিয়া এবং অনেক সময় যকৃতের অংশবিশেষও অপসারণ করা হয়। এ কাজের সঙ্গে সার্জন, অ্যানেসথেটিস্টসহ স্বাস্থ্যখাতের পেশাজীবী এবং অন্যান্য মেডিকেল বিশেষজ্ঞরা জড়িত রয়েছেন।
২০০৬ এবং ২০০৭ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এ ইস্যুটি নিয়ে চীনা সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন ওএইচসিএইচআর। তবে বিভিন্ন সরকারি উপাত্ত না থাকায় বিষয়টি আর বেশিদূর এগোয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিভাগের আরেকটি শাখা থেকেও সুদির্নিষ্ট সংখ্যালঘু কারাবন্দিদের শরীর থেকে অঙ্গ অপসারণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘স্বেচ্ছামূলক অঙ্গদান ব্যবস্থার ক্রম অগ্রগতি হওয়া সত্ত্বেও চীনে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেছেন, কারাবন্দি বা আটককৃতরা অঙ্গদানের সম্মতি দিয়েছেন অথবা তাদের স্বজনরা মৃতের শরীরের দাবি ছেড়ে দিয়েছেন কিনা এ বিষয়ে স্বতন্ত্র নজরদারির যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
এই ‘জোরপূর্বক অঙ্গহানির’ অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ বিষয়ে স্বতন্ত্র তদন্তের অনুমোদন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওএইচসিএইচআর।