শরিফুল ইসলাম রিয়াদ:
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন। ইতিহাসে এমন সাহসি জাতি খুঁজে পাওয়া মুশকিল যারা রক্ত ও জীবন দিয়ে ভাষা ও রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে।
যে ভাষা রক্ত দিয়ে কেনা-বেচা হয়েছে সে ভাষার মর্যাদা রক্ষায় তা জাতীয়ভাবে ব্যাপক প্রয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় আশা উচিত। কিন্তু আমরা তা না করে সাম্রাজ্যবাদীদের চাপিয়ে দেওয়া ভাষাকে সহজ ও বীরত্বব্যঞ্জক গ্রহণ করছি।
আমরা যেন আপন সন্তান থেকে অন্যের সন্তানের প্রতি দরদ বেশি প্রকাশ করছি।
আমরা কখনও ভাবিনি কেন আমারা নিজেস্ব ঢংয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও দর্শনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারিনা? কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কর্মগুলো বাংলায় হয়না? কেন বিচারকরা বাংলায় রায় লিখে না? কেন আমরা পশ্চিমের চাপিয়ে দেওয়া ভাষাগত সাম্রজ্যবাদ (To-Let, Road Number, Name plate House Number ইত্যাদি ) থেকে বের হতে পারিনি?
কেন পারিনি? এ দায় কার?
আপনি হয়তে ভাবছেন এটি আমার অন্ধত্ব! নতুবা উগ্র জাতীয়তাবাদ! না ভাই এটাই আত্ম পরিচয়ের শক্তি। এটাই নিজস্ব বোধ-চেতনা ও সংস্কৃতির মিশিলে বিশ্ব দরবারে বড় হয়ে উঠার বীরদর্পে চেষ্টা।
কারণ ধার করা সংস্কৃতি ও ভাষা দিয়ে হয়তো বেঁচে থাকা যায় কিন্তু শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়না।
আমরা নতুন আত্মপরিচয় চাই। নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে চাই। তবে ইতিহাস সৃষ্টির সহজ কোন পন্থা আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। ইতিহাস তৈরি করতে শতভাগের পর আরো দশভাগ চেষ্টা করতে হয়।
আমরা হয়তো আগে বুঝতে পারতাম না কোনটায় আমাদের মঙ্গল কোনটাই অমঙ্গল।এখন আমরা বুঝি পশ্চিমকে প্রশ্নাতীত কোলে তুলে নেওয়াই আমাদের মূল গদল।
আমরা একুশে ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে ভাবতে চাই।
আমরাও অন্য দশটি স্বাধীন সমৃদ্ধশীল জাতির মত মাথা উঁচু করে দাঁড়াব। আমরাও জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও দর্শনে অন্য কোন জাতি থেকে পিছিয়ে থাকব না। আমরা কারও মতো হব না আমরা আমাদের মতো হব। আমরা কারো অনুকরণ করব না নিজেদের সৃষ্টিশক্তি বিকাশিত করব।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সত্য এড়িয়ে যারা কথায় কথায় মিথ্যার সাথে আপোষ করে তারা কখনও জাতির মোড় ফিরাতে পারেনা।
আমরা এ জায়গায় কাজ করতে চাই।
এন.এইচ/