মঙ্গলবার | ৮ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি | ২৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বর্ষাকাল | রাত ৮:০৪

মঙ্গলবার | ৮ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি | ২৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বর্ষাকাল | রাত ৮:০৪

কুরবানির গোশত : লাইনে দাড় করিয়ে নয়, বাসায় পৌঁছে দিন!

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram
  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০৭ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:৪২ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:৫৪ অপরাহ্ণ
  • রাত ২০:২০ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ

নাজমুল হাসান:

ধর্মপ্রান মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঈদুল আজহা। হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হয়ে থাকে। আর ঈদুল আজহার সবচেয়ে বড় আমল হলো কুরবানি করা।

কুরবানির ঈদের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করা। গোশত খাওয়া উদ্দেশ্য না হলেও কুরবানির ঈদ মানে খাবারের একটি বিশাল আয়োজন। যারা কুরবানি দিয়ে থাকেন তাদের সবার বাড়িতেই রান্না করা গোশতের খুশবো ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় নানানরকম আয়োজন।

কিন্তু যারা কুরবানি দিতে অক্ষম বা যাদের উপর কুরবানি দেয়া ওয়াজিব নয় আমরা কি তাদের খবর ঠিকমতো রাখতে পারি? তারা কি অবস্থায় রয়েছে তা কি খেয়াল করি? আমাদের পাড়া-প্রতিবেশী অনেকেই আছে যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল। কুরবানি আদায় করার মতো সক্ষমতা অনেকেরই নেই। আমাদের চারপাশে এমন পরিবারও রয়েছে যারা দিন আনে-দিন খায়।

প্রতিবছর কুরবানির ঈদ এলে নতুন ফ্রিজ ক্রয় করা ও ঘরের ফ্রিজটি মেরামত করার হিড়িক পড়ে যায়। এ বছর অবশ্য তেমনটা এখনো চোখে পড়ছে না। এর অন্যতম কারন হতে পারে অনেকেরই আয়-রোজগার বন্ধ বা আয়-রোজগার খুব কম। তবুও আমাদের সমাজে অর্থ জমিয়ে রাখা বিত্তবান মানুষের সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। এ সমাজে যাদের আছে তাদের প্রচুর অর্থকড়ি রয়েছে। আবার যাদের নাই তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

আসছে কুরবানির ঈদেও যাদের উপর কুরবানি আদায় করা ওয়াজিব তারা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কুরবানি আদায় করবো। অনেকেই সমবন্টণ করে বিলিয়ে দিবে। আবার অনেকে গোশত ফ্রিজে জমিয়ে রাখবে। বছর শেষে তা নষ্ট হয়ে যাবে হয়তো, তখন রাস্তায় ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া বা কুকুরকে খাওয়াতে দেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। কিন্তু এমনটা যেনো না হয়। জমিয়ে রেখে নষ্ট হওয়ার পর ডাস্টবিনে বা কুকুর-বিড়ালকে না দিয়ে যারা সারা বছর অভূক্ত থাকে তাদের মাঝে বিলিয়ে দেয়াই উত্তম।

কুরবানির গোশতের নিয়ম হলো নিজ ভাগের পুরা গোশত কে তিন ভাগে ভাগ করে তার এক ভাগ গরিব-মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া। এ ক্ষেত্রে যাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব নয় এমন পাড়া-প্রতিবেশীদের ঘরে ঘরে কুরবানির গোশত পৌছে দেয়া। এছাড়াও তিন ভাগের এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের জন্য রাখার বিধান রয়েছে।

কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যায়, নাম মাত্র কিছু গোশত বিলিয়ে দিয়ে আত্মীয় স্বজনের দোহাই দিয়ে সারা বছর খাওয়ার আশায় গোশত ফ্রিজ করে জমিয়ে রাখে অনেকে। যা মোটেও ঠিক কাজ নয়। এতে করে কুরবানি আল্লাহর উদ্দেশ্যে না হয়ে মাংস খাওয়াই উদ্দেশ্য হয় বলে মনেহয়।

হ্যাঁ নিজেদের জন্য রাখা ভাগ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। কারন আমাদের আপনজন কেউ কেউ দূরে অবস্থান করছেন বা নিজেরা পরবর্তীতে খাওয়া যেতে পারে। তবে কুরবানির গোশত জমিয়ে না রাখাই ভালো। কারন যে কুরবানি আদায় করতে পারতেছি, পরবর্তীতে তাদের ক্রয় করে খাওয়ারও সামর্থ্য রয়েছে ।

আপনার ঘরের রান্না করা গোশতের খুশবো ঘ্রাণ ছড়িয়ে যায় বাতাসের সাথে। পাশের বাড়ির বা প্রতিবেশি যারা কুরবানি আদায় করতে পারেনি তাদের ঘরে অবুঝ শিশুরা রয়েছে। এমনও পরিবার রয়েছে যারা বছরে একবার গোশত খেতে পারে এই কুরবানির উসিলায়। অবুঝ শিশুরা তাদের বাবা-মায়ের কাছে গোশত খাওয়ার আকুতি জানায়। ছোট ছোট বাচ্চারা তো মনে করে সমাজের সবাই সমান। ঐ ঘরে গোশত রান্না হলে কেনো তাদের ঘরে রান্না হবে না। তাই তাদের বাবা-মায়ের কাছে আবদার থাকে। আর বাবা-মাকে সে আবদার পূরণ করতে হয়। বাবা-মায়ের মন তখন সন্তানের ইচ্ছা পূরণে ব্যকুল হয়ে ওঠে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও অন্যের দুয়ারে হাত পাততে হয়। একান্ত ইচ্ছা পূরণ করতে না পারলে মন খারাপ করা বা আল্লাহর দরবারে কান্না করা ছাড়া তাদের হয়তো আর কোনো উপায় থাকে না।

ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম মানবতার ধর্ম। ইসলাম ধনী-গরিব সবার জন্য সমান অধিকার দিয়েছেন। যাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে ধনীর সম্পদে গরিবের হকের বিধান রয়েছে। কেউ খাবে আর কেউ উপোস থাকবে ইসলামে এমনটা বলা হয়নি। আপনি নিজের জন্য যা পছন্দ করবেন, অন্যের জন্যও তা পছন্দ করুন এটাই হলো ইসলামের নৈতিক শিক্ষা।

কুরবানি একটি ইসলামিক আদেশ। তাই কুরবানি যারা দিবো তারা ইসলামিক হুকুম পরিপূর্ণ মানার চেষ্টা করি তাহলে সমাজে আর কেউ না খেয়ে বঞ্চিত থাকবে না। ফ্রিজে গোশত না পচিয়ে গরিবের মাঝে বিলিয়ে দেই, তাতে হক আদায় হবে এবং সওয়াবও বেশি পাওয়া যাবে।

আমাদের দেশের উপরতলায় বসবাস করা মানুষ লোকের মুখে নিজেকে ‘সম্পদশালী বা দানবীর’ প্রকাশের জন্য প্রতিযোগিতা করে দাম হাকিয়ে বাজারের সেরা গরুটা ক্রয় করে। যাতে সমাজের মানুষ বলে অমুক এ বছর সেরা গরুটা দিয়ে কুরবানী করছে বা অমুক দশটা/বিশটা গরু দিয়ে কুরবানি করছে। অথচ ইসলামের বিধান হলো, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্ঠি অর্জনের লক্ষ্যে যার যেমন তৌফিক সে তেমন ভাবে কুরবানি আদায় করবে। এখানে প্রতিযোগিতা বা নিজেকে জাহির করার কিছু নেই।

যারা প্রতিযোগিতা করে তারাই আবার গরু জবাই করার পর লাইনে দাঁড় করিয়ে গোশত বিলিয়ে দেয়। বাস্তবতায় দেখা যায়, নিম্ন মধ্যবিত্তরা বা গরিব-মিসকিনরা অনেকে লজ্জা ও ইজ্জত রক্ষায় লাইনে দাড়িয়ে গোশত সংগ্রহ করতে যায় না। লাইনে দাড় করিয়ে নয় বরং (সম্ভব হলে) অভাবী গরিব-মিসকিনদের ঘরে ঘরে কুরবানীর গোশত পোঁছে দেয়া আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে উত্তম বিনিময় পাওয়ার আশায় আমরা এটা করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সমস্ত নেক আ’মল গুলো কবুল করুন। আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো যেন মাফ করে দেন- আমিন।

 

লেখক:  নাজমুল হাসান (শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। )

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram

Leave a Comment

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

জণকল্যানমূলক ফাউন্ডেশনকে রক্ষায় চট্টগ্রামে মানববন্ধন 

নিজস্ব প্রতিবেদক – নগরীর বহদ্দারহাটস্থ আরাকান রোডে ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান’স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজ ও ছাত্র জনতার ব্যানারে আজ সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৪টায় এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম এ. এম. ওয়াহিদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এতিমখানা বন্ধ করে সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ, ট্রেনিং সেন্টার গুঁড়িয়ে

২০ দফা দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মতবিনিময় ও স্মারকলিপি

গবেষণাবান্ধব শিক্ষা বাজেট প্রণয়নে প্রস্তাবিত বাজেটের ২০ শতাংশ এবং মোট জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দসহ ২০

শিক্ষা খাতে বাজেটের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দসহ ২০ দফা দাবি -ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ

আজ ২৫ মে ২০২৫ রোজ রোববার সকাল ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ইসলামী

  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০৭ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:৪২ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:৫৪ অপরাহ্ণ
  • রাত ২০:২০ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ