ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তিনজনের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে তাঁরা উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে ফেরার সময় শহরের নিমতলা মসজিদ এলাকায় একদল যুবক তাঁদের কাগজপত্র ছিনিয়ে নেন। ওই যুবকেরা তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে শাসান।
এই যুবকেরা সরকারি দলের সন্ত্রাসী বলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে। দলটির জেলা নেতারা অবিলম্বে এই মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি তাঁদের সব প্রার্থী যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ডা: এইচ এম মোমতাজুল করীম ও সেক্রেটারী প্রভাষক মাওলানা শিহাব উদ্দীন এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই সাথে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও কালিগঞ্জ থানা প্রশাসনকে জড়িতদের খুজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নেতৃদ্বয় জোর দাবি জানিয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সহসভাপতি ও কোলা ইউনিয়নে মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল হোসেন বলেন, গতকল দুপুরে তাঁরা ছয়জন একসঙ্গে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যান। সেখান থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তিনি, নিয়ামতপুর ইউপির প্রার্থী মো. লিয়াকত হোসেন ও রায়গ্রাম ইউপির প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন মন্টু বাইরে আসেন। বাকি তিনজন তখনো অফিসের ভেতরে ছিলেন। বাবুল হোসেন বলেন, তাঁরা তিনজন উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় মসজিদের গলির মধ্যে আসামাত্রই সাত থেকে আটজন যুবক তাঁদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্রগুলো জোর করে ছিনিয়ে নেন। তাঁরা মনে করেন, এটা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
বাবুল হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই তাঁরা নির্বাচন অফিসে গিয়েছিলেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে আজ তাঁরা লিখিত অভিযোগ দিতে পারেননি, তবে শিগগিরই অভিযোগ জমা দেবেন বলে জানান। তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন—এমন ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, তাঁর কাছে অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন কয়েকজন। যাঁদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন, তিনি তাঁদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। আগামী ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। ফলে তাঁদের এখনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
তৃতীয় ধাপে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে তাদের নৌকা প্রতীকের দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১১টির মধ্যে ৯টিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে, যাঁরা হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অংশ নেবেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা হলেন ১ নম্বর সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নে নুর ইসলাম, ২ নম্বর জামাল ইউনিয়নে আরিফুর রহমান, ৩ নম্বর কোলা ইউনিয়নে বাবুল হোসেন, ৪ নম্বর নিয়ামতপুর ইউনিয়নে লিয়াকত হোসেন, ৫ নম্বর সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নে ফকর উদ্দিন, ৭ নম্বর রায়গ্রাম ইউনিয়নে হাজি আনোয়ার হোসেন মন্টু, ৮ নম্বর মালিয়াট ইউনিয়নে হাফেজ অজিউল্লাহ, ১০ নম্বর কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে বিল্লাল হোসেন ও ১১ নম্বর রাখালগাছি ইউনিয়নে আনোয়ার হোসেন। ৬ নম্বর ত্রিলোচনপুর ও ৯ নম্বর বারোবাজার ইউনিয়নে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি বলে দলটি জানিয়েছে।
ওয়াইপি/