ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘দেশের অরাজকতার পেছনে দায় হল, নীতি ও আদর্শের অনুপস্থিতি। সুতরাং ব্যক্তি সংস্কারের পাশাপাশি নীতির সংস্কার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। দেশের সংবিধান সংস্কার করে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে নতুন সংবিধান ঢেলে সাজাতে হবে। নচেৎ দেশ আবারো অরাজকতার মুখে পড়বে, দলীয় শাসন ও দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হবে। এবং আবারো শাসক গোষ্ঠির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হয়ে যাবে। সুতরাং শুধু শাসকের পরিবর্তন নয়, নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আগামীর বাংলাদেশ: যুব সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মুফতী মানসুর আহমদ সাকীর সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে শায়খে চরমোনাই আরো বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে শাসকগোষ্ঠীদের মোহ ও উচ্চাভিলাসকে অগ্রাধিকার দিয়ে আইন প্রণয়ন করার কারণে দেশে কখনোই জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কর দিয়ে বারবার স্বৈরাচার ও দূর্নীবাজ সরকার পুষেছে, যারা দেশের জন্য কাজ করেনি। যার ফলে দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি, বৈদেশিক ঋণের বোঝা বেড়েছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে এবং জালেম শাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল পায়নি।
গোলটেবিল বৈঠকে আরো আলোচনা করেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ড. ফয়জুল হক, বিশিষ্ট ইসলামী অর্থনীতি গবেষক মুফতী আবদুল্লাহ মাসুম, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাহ ইফতেখার তারিক, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারন সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, বিশিষ্ট লেখক শায়খ উছমান গনী, সিনিয়র সাংবাদিক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য শাহরিয়ার পলাশ, চ্যানেল ২৪ উপস্থাপক মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী, এবি যুব পার্টির নেতা শাহাদাত হোসেন টুটুল, যুব অধিকার পরিষদের সাধারন সম্পাদক নাদিম হাসান, ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহাইমিন পাটোয়ারি, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের মাওলানা রাকিবুল ইসলাম, ভাসানী যুব পরিষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, ইসলামী যুব মজলিসের শেখ সাব্বির আহমদ, ব্রাকের এইচ আর জনাব ফারহান বাশার, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, বিকল্প যুব ধারা সভাপতি আসাদুজ্জামান বাচ্চু, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী, অ্যাড. মনিরুল ইসলাম, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাওলানা নিজাম উদ্দিন আল আদনান, ঢাকা টাইমসের সিনিয়র সহ-সম্পাদক শাহনূর শাহীন, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সহ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতী মঈনুদ্দীন খান তানভীর, জনাব অশীত পাল। এছাড়াও ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় ও নগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক অ্যাডভোকেট ইমতিয়াজ আহমেদ।
প্রধান অতিধির বক্তব্যে শায়খে চরমোনাই আরো বলেন, ইসলামী শাসন ছাড়া জাতির মুক্তি নাই। ইতোপূর্বে সরকারগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করে এসেছে। ইসলামী শাসনের ব্যাপারে জনমনে ভীতি তৈরি করতে স্ক্রিপ্ট তৈরি হয়েছে। এর কারণ ছিল, বিগত সকল সরকার তাদের দূর্নীতি-দুঃশাসন চালাতে গিয়ে ইসলামকে বিষোধগার করেছে। ইসলাম ক্ষমতায় আসলে তারা এসকল অপরাধ করতে পারত না। সুতরাং কেমন শাসন চাই, একথার উত্তরে একবাক্যে বলা যায়, শরীয়াহ ভিত্তিক সংবিধান ও অনুশাসন চাই। এসময় তিনি বলেন ইসলাম, দেশ ও মানবতার ভিত্তিতে ঐক্যে করতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত।
এছাড়াও বক্তারা দেশকে ঢেলে সাজাতে যুব ও ক্রিড়া উপদেষ্টাকে দ্রুতই দেশের প্রতিনিধিত্বশীল যুব সংগঠনগুলোর সাথে আলোচনারও দাবি জানান।