অটোম্যান সাম্রাজ্যের সুলতান সুলেমানের আমলে পরিকল্পনা করা একটি খাল খননের উদ্বোধন করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। খননের পর এ খাল দেশটির বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশকে দুই ভাগ করবে। তবে এটি কৃষ্ণ সাগর এবং মারমার ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে।
সুয়েজ বা পানামা খালের আদলে কৃত্রিমভাবে খনন করা ইস্তাম্বুল খালের লক্ষ্য হচ্ছে বসফরাস প্রণালির বিকল্প তৈরি করে ওই দুই সাগরের মধ্যে আরও বেশিসংখ্যক জাহাজ চলাচলের পথ সুগম করা। তবে তুরস্কের অনেক রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী ও পরিবেশবাদী এ খাল খনন প্রকল্পকে এরদোয়ান সরকারের পাগলামি বলে বর্ণনা করছেন। খবর বিবিসির
তাদের মতে, এর ফলে ইস্তাম্বুল শহরের বিপদ বাড়বে এবং ওই অঞ্চলের পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। তবে এরদোয়ানের যুক্তি হচ্ছে, এই খাল তার দেশের উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
এরদোয়ানের ভাষ্য, বসফরাস প্রণালি দিয়ে ১৯৩০-এর দশকে প্রতি বছর তিন হাজার জাহাজ পারাপার হতো। এখন প্রতি বছর ৪৫ হাজার জাহাজ এই প্রণালি অতিক্রম করে। এই শতকের মাঝামাঝি নাগাদ, অর্থাৎ ২০৫০ সালের দিকে এ সংখ্যা ৭৮ হাজারে দাঁড়াবে। এত বিপুলসংখ্যক জাহাজের চলাচল ইস্তাম্বুল শহরের জন্য চরম ঝুঁকি তৈরি করবে।
ইস্তাম্বুল খাল খননের প্রথম পরিকল্পনা হয় অটোম্যান সাম্রাজ্যের সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের আমলে। অজ্ঞাত কারণে প্রকল্পটি তখন বাতিল হয়ে যায়।
সুলতান তৃতীয় মুরাদের আমলে ১৬৯১ সালের ৬ মার্চ এই খাল খননের জন্য একটি রাজকীয় ফরমান জারি করা হয়। সেটিও বাদ হয়ে যায়। এভাবে সাতবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এরদোয়ান সেই কাজে হাত দিয়েছেন। বসফরাস প্রণালি সামরিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথগুলোর অন্যতম। এই প্রণালি ব্যবহারের জন্য মট্রো নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি রয়েছে। এ চুক্তির বাইরে আরেকটি যোগযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান এরদোয়ান, যেখানে শুধু তুরস্কের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকবে।