বহুল প্রতিক্ষার পর ফরাসি দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাঠে এসেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও কোনো কর্মসূচি না দেয়ায় আবারও হারিয়ে যেতে বসেছে কিনা হেফাজতে ইসলাম এমন প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। অপরদিকে দেশব্যাপী ধর্ষণের মহোৎসব শুরু হওয়ার পর হেফাজত সম্পৃক্ত ওলামায়ে কেরাম নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে মাঠে এসেছে নিজস্ব শক্তির জানান দিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মূল ধারার গণমাধ্যমে হেফাজতকে সামনে না এনে নিজস্ব দলগুলোর ব্যানার নিয়ে মাঠে এসেছে হেফাজত নেতারা এবং আলোচনা সমালোচনার পর সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে হেফাজত ঢাকা মহানগরীর ব্যানারে একটি শক্তির জানান দিয়েও আল্টিমেটাম অনুযায়ী নতুন কোনো কর্মসূচি না আসায় আবারও সমালোচনার ঝড় উঠতে শুরু করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নাস্তিক ব্লগারদের ইস্যুতেও গুটি কয়েক নেতা বাদে বাকি হেফাজত নেতারা রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সে আন্দোলনে নেমেছিল। সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে হেফাজত যখন হামলা-মামলার ভয়ে পর্যদুস্ত তখন সারাদেশে নেতাকর্মীদের এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভাগ্য শূন্যে ছেড়ে দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে ছিলেন হেফাজতের এক শীর্ষ নেতা। পরবর্তীতে তুমুল সমালোচনা পরা এই নেতাকেও ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও আন্দোলনে প্রথম সারিতে দেখা যায়। বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেনি নাস্তিক ব্লগার বিরোধী হেফাজতের আন্দোলনে নির্যাতিত নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা মনে করেন হেফাজতের এই নেতা এবারও রাজনীতিতে তার অবস্থান নতুন করে জানান দিতেই এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
সব মিলিয়ে বর্তমান হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সুসংগঠিত নেই বলে মন্তব্য করছেন তরুণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আমিরে হেফাজত আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর নতুন করে এ দায়িত্ব কার ওপর আসছে এমন জল্পনা-কল্পনা চলছে কওমি অঙ্গনে। কেউ কেউ বক্তব্য এবং উপস্থাপনার মধ্যে পরোক্ষভাবে কাউকে সে স্থানে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন। হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী কে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত কর্তৃক বাতিল ঘোষিত মাইজভান্ডারীর সাথে সাম্প্রতিক সময়ে বাবুনগরী সাহেবের যোগাযোগ ও সুসম্পর্কের বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছে না অনেকেই। এজন্য চট্টগ্রাম ছেড়ে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত এখন ঢাকার ওলামায়ে কেরামের দিকে। তবে কি আসছেন আমিরে হেফাজত হয় তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
আমি প্রেজেন্ট নিউজের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং আমি হেফাজত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সূরার সম্মানিত সদস্য দের প্রতি আহ্বান জানাই “রাজনৈতিকভাবে হোঁচট খাওয়া, অতি সরল হওয়ায় নিজের অবস্থান ধরে রাখতে না পারা, কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, বিপদের মুখে নেতাকর্মীদের রেখে দেশ ত্যাগ করা এবং চাপের মুখে তাগুতের পক্ষে কথা বলা” ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহভীরু নেতৃত্ব নির্বাচন করুন। তবেই আমিরে হেফাজত আল্লামা আহমদ শফীর স্বপ্নের গড়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সঠিক ধারায় পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, মতামত কলামে প্রকাশিত লেখার সবধরনের দায় লেখকের নিজের।