করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মার্কিন নাগরিকদের গুয়ানতানামো বে’তে পাঠানোর কথা বিবেচনা করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন একটি বইতে দাবি করা হয়েছে ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে সিচুয়েশন রুমে ট্রাম্প কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান, ‘আমাদের কোনও দ্বীপ নেই? গুয়ানতানামোর অবস্থা কী?’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কিউবার গুয়ানতানামো বে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন একটি আটক কেন্দ্র। মারাত্মক অপরাধে যুক্ত সন্দেহভাজনদের এখানে আটক রাখা হয়। ৯/১১ হামলায় অভিযুক্তদেরও এখানে আটক রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ বন্দিদের আটক রাখে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার নেওয়ার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা পণ্য আমদানি করি। একটা ভাইরাস আমদানি করতে যাবো না।’ পরে নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ট্রাম্প।
করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় পদক্ষেপের কারণে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে ট্রাম্প প্রশাসন। জনস হপিকন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে এই মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ লাখ এক হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চার লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ট্রাম্পের আমলে।
ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গুয়ানতানামো বে’র প্রসঙ্গ তুললে অবাক হয়ে যান তার কর্মকর্তারা। দ্বিতীয়বার তিনি একই প্রস্তাব তুললে তা বাতিল করে দেন তারা।
নতুন এই বইটি লিখেছেন ওয়াশিংটন পোস্টের দুই সাংবাদিক ইয়াসমিন আবুতালেব এবং দামিয়ান পালেত্তা। ‘নাইটমেয়ার সিনারিও: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’স রেসপন্সন টু দ্য প্যানডেমিক দ্যাট চেঞ্জ দ্য হিস্টোরি’ শিরোনামের বইটি ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে।
গত বছরের ১৮ মার্চ তৎকালীন হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিস সেক্রেটারি অ্যালেক্স আজারকে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘পরীক্ষার কারণে আমি মারা যাচ্ছি। পরীক্ষার কারণে নির্বাচনে আমি হারবো! কেন্দ্রীয় সরকার পরীক্ষা করে করছেটা কী?’ তার পাঁচদিন আগে ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষা নীতির দায়িত্ব নেন। সেই দিকে ইঙ্গিত করে আজার জবাব দেন, ‘আপনি কি জারেডকে কিছু বলছেন?’
বইটিতে আরও দাবি করা হয়েছে একটি ক্রুজি শিপে করোনায় আক্রান্ত ১৪ মার্কিন নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার অনুমোদন দেওয়ায় সেই সময় ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসের জরুরি প্রস্তুতি বিষয়ক প্রধান রবার্ট ক্যাডলেক এবং পররাষ্ট্র দফতরের এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে শেষ পর্যন্ত অন্য কর্মকর্তাদের বিরোধিতায় তার সেই চেষ্টা সফল হয়নি।