বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ছাড়া বিশ্বের সব দেশের ক্ষেত্রে বৈধ’ কথাটি আর লেখা থাকছে না। পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্তেই নতুন ই-পাসপোর্ট থেকে ইসরাইলের প্রসঙ্গটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে লেখা থাকবে–’এই পাসপোর্ট বিশ্বের সব দেশের ক্ষেত্রে বৈধ’। তবে বিষয়টি এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণার মধ্য দিয়ে জানানো হয়নি।
এদিকে ইসরাইলের গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে শনিবার বলা হয়েছে, ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ। মূলত পাসপোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সূত্র ধরেই এ সংবাদ করেছে গণমাধ্যমটি। এ খবরে এক ধরণের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ইসরাইল ইস্যুতে কয়েক যুগ ধরে অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতি থেকে বাংলাদেশ সরে এসেছে কিনা সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তবে বিষয়টি পরিস্কার হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের কথায়। তিনি রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশ তার ইসরাইল নীতি পরিবর্তন করেনি।
তবে পাসপোর্টের কেন পরিবর্তন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পাসপোর্টের ‘আন্তর্জাতিক মান’ রাখতে গিয়ে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন বলেন, বিশ্বের কোনো দেশ এ শব্দটি ব্যবহার করেনি। এমনকি আরব অঞ্চলের দেশগুলোর পাসপোর্টেও এটি লেখা নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ই- পাসপোর্টে পরিবর্তন এলেও এমআরপিতে তা আগের মতোই রয়েছে।
পাসপোর্টে পরিবর্তনের বিষয়ে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আইয়ুব চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে এটা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টে এক সময় লেখা থাকত- ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরাইল, তাইওয়ান অ্যান্ড দ্য রিপাবলিক অব সাউথ আফ্রিকা’ কথাটি।
পরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও তাইওয়ানের নামটি ওই নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে বাদ গেলেও ইসরাইল থেকে যায়। কয়েক বছর আগে হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) চালুর পরও আগের মতো প্রথম পৃষ্ঠায়ই লেখাটি ছিল।
বর্তমানে ই পাসপোর্টে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে লেখা হচ্ছে শুধু- ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’।
গাজায় সাম্প্রতিক ইসরাইল-হামাস সংঘাতের মধ্যে এই পরিবর্তনটি আলোচনায় আসে।
৮০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ফিলিস্তিন-ইসরাইল দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ শুরু থেকেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে।
ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি বাংলাদেশ, ফলে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই। বিপরীতে ফিলিস্তিনকে দূতাবাস করতেও ঢাকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে। সূত্রঃ যুগান্তর