হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাতে উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা দেখা করতে গেলে সরকারের সিদ্ধান্ত ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হল খোলা হবে না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘আবাসিক হল খোলা একটি জাতীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। হল খুললে কেউ বলবে ট্রাম্পের মতো আচরণ করছে। তখন এটি হবে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’
হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাতে উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা দেখা করতে গেলে তিনি এই কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে ছাত্রলীগের সঙ্গে বৈঠক করেন উপাচার্য। সাংবিাদিকরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘তোমাদের দাবির সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি না। কিন্তু বিষয়টি হলো এটি কোনও সাধারণ বন্ধ নয়। এ বন্ধ হলো প্যানডেমিক মুহূর্তে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ধ। এ বন্ধ হলো ইনফেকশাস ডিজিজ ঠেকানোর জন্য বন্ধ। এখানে মামলা করার বিধান আছে। আজ যদি কেউ হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বড় আকারের ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয়ভাবে একটি সিদ্ধান্ত হলে সেটি একরকম। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরো জাতিকে অন্যদিকে নিয়ে নিয়ে যেতে পারি না। তখন কেউ বলবে ট্রাম্পের মতো আচরণ করছে। এটি একেবারেই অযৌক্তিক হবে। ফলে এ বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আবাসিক হল খুলতে জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত আমাদের লাগবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের মতামত লাগবে। গতকাল ইউজিসি থেকে একটি চিঠি দিয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে হলসমূহ বন্ধ রাখতে হবে। তবে পরীক্ষা নেওয়া যাবে বলে জানানো হয়। এ মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা একটি জাতীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু এর বাইরে গিয়ে আমরা কোনও কাজ করে সরকার এবং জাতিকে ঝুঁকিতে ফেলে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে চাই না।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, উপ গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ফরিদা পারভীন।
এদিকে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হল খুলে দিয়ে অনার্স-মাস্টার্স পরীক্ষা নেয়াসহ চার দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি করে জোটের নেতারা।
এছাড়া একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার দুপুরে থেকে এ কর্মসূচি করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।