রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণনিয়োগ পাওয়াদের ১২৯ জনের সিভি বা কোনো ডকুমেন্টস পাননি বলে জানিয়েছেন এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরমধ্যে মাত্র ৯ জনের সিভি পেয়েছেন তারা। বাকি ডকুমেন্টস তদন্ত কমিটি নিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যপক আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বন্ধ রাখে প্রশাসনিক কারণে। এরপরও গত ৫ মে কাগজপত্র প্রস্তুত করে ৬ মে নিয়োগ দেয়া হয় সবাইকে ডেকে। মোট ১৩৮ জনের তালিকা পেয়েছি আমরা। এরমধ্যে মাত্র ৯ জনের সিভি পেয়েছি। বাকি কারোর ডকুমেন্টস নেই। এর মানে পুরো প্রক্রিয়াতেই অস্বচ্ছতা ছিল বলে জানান তিনি।
অধ্যপক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তিনি অনেক বিষয়ের উত্তর দিতে পারেননি। তিনি অনিয়মের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’ এ সময় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখনও কাজ শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এর প্রতিবেদন জমা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এদিকে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের দাবি, উপাচার্যর কাছে তারা একাধিকবারও সিভি জমা দিয়েছিলেন। নিয়োগ পাওয়া মাহফুজ আল আমিন দাবি করেছেন, নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা সিভি জমা দিয়েছেন উপাচার্যের কাছে। অনেকে একাধিকবার সিভি দিয়েছেন। এগুলো প্রশাসনের কাছে আছে। নিয়োগকে বিতর্কিত করতে এটি ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে জীবনবৃত্তান্তসহ আবেদন করতে বলা হয়। সব নিয়োগেই এমন হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো ডকুমেন্টস জমা পড়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে ডকুমেন্টস ছিল, তদন্ত কমিটি সেগুলো নিয়ে গেছে। তদন্তাধীন এ বিষয় নিয়ে আর কথা বলবো না।’
উল্লেখ্য, গত ৫ মে রাতে রাবির বিদায়ী ভিসি অধ্যাপক ড. সোবহান ১৪১ জনকে নিয়োগ দিলে ৬ মে তার কার্যদিবসের শেষদিনে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভিসি সোবহান কড়া পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। নিয়োগ পাওয়াদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
এদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি অন্য সদস্যরা হলেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জাকির হোসেন আকন্দ ও ইউজিসির পরিচালক জামিনুর রহমান। কমিটি গত ৮ মে রাবি ক্যাম্পাসে গিয়ে দিনভর ঘটনা তদন্ত করেন।