নবনিযুক্ত ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, মূর্তি আর ভাস্কর্য নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি আছে। মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়—এই জিনিসটা যখন আমরা বোঝাতে সক্ষম হব তখন সবকিছুর একটা সমাধান পেয়ে যাব।
আজ রবিবার (২৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ভাস্কর্য সরানোর জন্য হেফাজতে ইসলামের দাবির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটা জিনিস বুঝতে হবে—কিছু কিছু লোক কোনো কোনো সময় শুধু বাংলাদেশে নয়; সারা বিশ্বে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় কিছু অঘটন ঘটায়। যখন কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন সমাধানেরও একটা ব্যবস্থা হয়। এ মন্ত্রণালয়ে আমি নতুন, আমি এ বিষয়গুলো চিন্তা করব, ভাবব এবং পরামর্শ করব—কীভাবে এটা করলে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে এবং সার্বিক দিক থেকে আর যেন কেউ পরবর্তীতে সুযোগ না পায় সেগুলো আমাদের চিন্তায় রাখতে হবে। আমি আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা চাই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মূর্তি আর ভাস্কর্য কিন্তু এক জিনিস নয়। আজকে পাকিস্তানে যান, ভারতে যান; সারাবিশ্বের যে কোনো রাষ্ট্রে যান না কেন সব জায়গাতেই ভাস্কর্য আছে। ভাস্কর্য যদি মূর্তি হয় তাহলে টাকার ভেতরে বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে, এর আগে যারা ছিলেন তাদের ছবি ছিল, সেগুলো কীভাবে থাকলো? সেগুলো পকেটে নিয়ে তো সবাই ঘুরে বেড়ায়। কয়েনের মধ্যেও আছে, সারা বিশ্বে যে কোনো দেশে যান দেখেন কয়েনের ভেতরে কিন্তু সবকিছু (ছবি) আছে। এগুলো আসলে আমাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। আজকে যদি সব জায়গায় চলে, ইসলামিক দেশগুলো—আমি মিশরে গিয়েছি সেখানে দেখেছি। সৌদি আরবে যান সেখানেও আছে। তাহলে সেটা যদি হয়, তাহলে বাংলাদেশে আজকে যারা এটা নিয়ে আলোচনা করছে তাদেরও একটু চিন্তা করতে হবে—মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। এই জিনিসটা যখন বোঝাতে সক্ষম হব তখন সবকিছুর একটা সমাধান পেয়ে যাব বলে আমাদের বিশ্বাস।
আন্দোলনকারীদের বিষয়ে বার্তা কী—জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের কাছে পরিষ্কার করে বলেছি। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমি বসব, আলোচনা করব, চিন্তা করব। পরবর্তীতে কী করা যায় তার একটা চিন্তা অবশ্যই আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আসবে।
ফরিদুল হক খান বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্য দিয়েছেন। অতএব আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন, আমরা এগুলোর একটা সমাধানের জন্য যে ধরনের কাজ করা প্রয়োজন সেটা আলোচনা সাপেক্ষে করব ইনশাল্লাহ। কাজেই আপনারা অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই, আমরা প্রত্যেকটা জিনিসকেই সূক্ষ্ণভাবে নিজেদের বিবেক দিয়ে বিবেচনা করে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে কাজ করব।