ভাস্কর্য ইস্যুতে গণভোট নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা।
এক ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি ভাস্কর্য ইস্যুটি রাজনীতির মাঠে জটিল আকার ধারণ করেছে। উভয় পক্ষ সংঘাতে জড়াবে না বললেও পরিস্থিতি সংঘাতের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে। একদিকে হেফাজতে ইসলামের নেতারা তাদের ধর্মীয় জায়গা থেকে ভাস্কর্যকে ইসলামের নীতি বহির্ভূত বলছেন এবং এর প্রতিবাদ করা ঈমানী দায়িত্ব বলছেন। সেই জায়গা থেকে প্রতিবাদ করছেন। অন্য দিকে আওয়ামিলীগের নেতারা ও বুদ্ধিজীবিরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেছেন এবং মাঠে মার-মার কাট-কাট অবস্থার জানান দিচ্ছেন কারণ যে ভাস্কর্য নিয়ে মূলত বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ, তা স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য— যিনি আওয়ামিলীগের রাজনীতির মূল অস্তিত্ব।
তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে গণতন্ত্র, মানুষের মতামতের মূল্যায়ন। যেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই মূলত লুঙ্গিপরা কৃষক থেকে শুরু করে কোর্ট প্যান্ট পরা অফিসাররা যুদ্ধে গিয়েছিলো।সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি প্রক্রিয়া গণভোটের মাধ্যমে এই পরিস্থিতির সমাধান হতে পারে।
আমরা ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের ডাক দিয়েছিলাম এখন রাষ্ট্র সংস্কারের ডাক দিয়েছি। সংবিধানে গণভোট সংযুক্ত করা আমাদের অন্যতম একটি ইশতেহার। আমরা মনে করি মানুষের মতের মূল্যায়ন ও অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে রাষ্ট্রীয় গভীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে গণভোট একটি অন্যতম গণতান্ত্রিক অবলম্বন।যদিও ক্ষমতাসীন দলের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন এখনো হয় নি কিন্ত সরকার শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক সমাধানের দিকে না গেলে দুদিন আগে বা পরে সংঘাত অনিবার্য।
পৃথিবীতে উন্নত গণতন্ত্র চর্চা যারা করে তারা রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে গণভোট আয়োজন করে থাকে। যেমন ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটেন গণভোট করেছে। অনেক সময় ইস্যুটা সিম্পল হলে ও সেটা রাজনৈতিক কারণে ডিপ ক্রাইসিস তৈরি করতে পারে। ইউরোপের ৩০ টি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ২৩ টি অঙ্গরাজ্যে গণভোট ব্যাবস্থা আছে।
সংঘাত সহিংসতায় না গিয়ে আমি হেফাজতের ইসলামের প্রতি আহবান জানাবো যে, তারা সরকারকে যেন গণভোটের আহবান জানায়। সরকারের প্রতি আহবান জানাবো, সংঘাত সহিংসতায় না গিয়ে সত্যিকারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটা গণভোটের আয়োজন করুন। জনগণ যা চায় তাই করুন।
সংবিধানে গণভোটের ব্যবস্থা সংযুক্ত করুন। মোট ভোটারের ১% অনলাইনে বা অফলাইনে পিটিশন দিলে সেই ইস্যুতে গণভোট হবে সেই ব্যবস্থা সংযুক্ত করুন।
বাংলাদেশের মোট ভোটার প্রায় ১০ কোটি ৯৬ লাখ সেই হিসেবে প্রাথমিক ভাবে হেফাজতের নেতারা তাদের পক্ষে ১০ লাখ ৯৬ হাজার মানুষের লিখিত মত সংগ্রহ করুন। সরকারকে সেই ডুকুমেন্ট সহ গণ ভোটের প্রস্তাব দিন।
এক্ষেত্রে কারো মত প্রতিফলিত হতে পারে করো মত প্রতিফলিত না ও হতে পারে তবে গণতন্ত্রের বিজয় হলে সেটি বাংলাদেশের বিজয়, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। সেটি সকলেরই বিজয়।
যে যেই দলই করুক যেই মতেরই হোক রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণতান্ত্রিক পথই অনুসরণ করতে হবে কেননা ক্ষমতা বদল কিংবা রাজনৈতিক সঙ্কটে উত্তরণের জন্য সংঘাতে না গিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে সমাধানের জন্যই ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছিলো।