বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা নিশ্চিত করেই খুলে দেওয়া হবে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল সোমবার (৩১ মে) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সূহ খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও উপাচার্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভা শেষে এ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সভার সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সভায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দিয়ে আবাসিক হল খুলে দেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সরাসরি উপস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় চালু হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দুই ডোজ টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আসন্ন ঈদুল আজহা পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। আগামী জুলাইয়ে দ্বিতীয় ডোজ শেষ করেই আবাসিক হলসহ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে আগস্টের প্রথম দিকে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, চলতি মাসের শুরুতেই চীনা টিকা পাওয়ার পর অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রথম ডোজ শুরু করা হবে। এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ ২১ থেকে ২৮ দিন দিন পর থেকেই দেওয়া যায়।
“যদি এখন শুরু করা যায় তাহলে দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করে ঈদুল আজহার পর আগস্টের শুরুর দিকে সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো সরাসরি পরিচালিত হবে শিক্ষা কার্যক্রম, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন।”
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের অনুষ্ঠিত বৈঠক চার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে-
১) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদানের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই টিকা প্রদানের কর্মসূচি আবাসিক হলসমূহের শিক্ষার্থীদের দিয়ে শুরু হবে।
২) ইতোপূর্বে ইউজিসি কর্তৃক শর্তসাপেক্ষে সরাসরি উপস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য যে দুইটি নির্দেশনা প্রদান করেছে, তা স্ব-স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদনের প্রেক্ষিতে কার্যকর করে বিষয়বস্তুর ওপর চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করা হবে।
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান সম্পন্ন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সরাসরি উপস্থিতিতে শিক্ষাকার্যক্রম পূর্বের ন্যায় চালু হবে।
৪) কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীগণের শিক্ষাজীবনে যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব সক্ষমতা ও বাস্তবতা অনুযায়ী একটি Recovery Plan প্রস্তুত করে তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এই Recovery Plan এর একটি সাধারণ Guideline বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন প্রস্তুত করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে প্রেরণ করবে।