টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ১১টার দিকে রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে শপথ নেবেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগেই এই অনুষ্ঠান অনাড়ম্বর রাখার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। সীমিত আয়োজনের এই অনুষ্ঠানেও বিরোধী নেতাদেরও অতিথি করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, রাজনৈতিক সৌজন্য মেনেই ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিদায়ী বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা, গত বিধানসভার বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, কংগ্রেস সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখকে।
বিরোধী নেতা-নেত্রী ছাড়াও নিজের দলের বেশ কয়েকজনকেও আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পৌর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম, দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিদায়ী মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রত বক্সীসহ একাধিক নেতা-নেত্রী।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় রয়েছেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট তথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিও।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির’ বিরুদ্ধে জেতা মমতা আজ এমন পরিস্থিতিতে শপথ নিতে যাচ্ছেন যেখানে জয়ের পরে নানা সহিংসতায় অন্তত ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
এর মধ্যে তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের নেতাকর্মী-সমর্থক আছেন।
মমতা রাজ্যজুড়ে ভোটপরবর্তী রাজনৈতিক সংঘর্ষের দায়ও বিজেপির ওপর চাপিয়েছেন। বলেছেন, ভোটে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা আগে থেকে করে আসছে বিজেপি। এর দায় মোদি-অমিত শাহর।
সোমবারই রাজ্যপাল ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন মমতা ব্যানার্জী। রাজ্যে নতুন সরকার গঠনের আগের প্রথা মেনেই এই পদত্যাগ করেন তিনি। পরে টুইট করে রাজ্যপাল জানান, মুখ্যমন্ত্রী তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তা গৃহীতও হয়েছে। তবে পরবর্তী সরকার গঠন হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকেই দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ওই টুইটের সঙ্গে রাজভবনে মমতা এবং ধনখড়ের একটি ভিডিও শেয়ার করেন রাজ্যপাল।
এর কিছুক্ষণ পরেই টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতার শপথ নেওয়ার দিনক্ষণ ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। সূত্রঃ যুগান্তর।