রবিবার | ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শরৎকাল | রাত ২:৩৯

রবিবার | ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শরৎকাল | রাত ২:৩৯

রবিউল আউয়াল: আনন্দ ও বেদনার যে মাস

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram
  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৪:২৮ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০০ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:১৬ অপরাহ্ণ
  • রাত ১৯:৩১ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ
মাওলানা নুর আলম বিন শাহ জাহান।। হিজরি সনের তৃতীয় মাস রবিউল আওয়াল। ‘রবিউন’ অর্থ বসন্তকাল। এ মাসে আরবের প্রকৃতিতে বসন্ত লাগত। তাই এর নাম রবিউল আউয়াল বা বসন্তের প্রথম মাস। এটি মুসলিম উম্মাহর এক তাৎপর্যময় মাস। এই মাসে মহানবী হজরত
মুহাম্মদ সা. পৃথিবী আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন এবং এ মাসেই তিনি উম্মাহকে এতিম করে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। তাই রবিউল আউয়াল একই সঙ্গে খুশি ও দুঃখ-বেদনার মাস। যে কারণে আনন্দের- প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী, ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ১২ই রবিউল আউয়াল
মাসে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব এবং সর্বশেষ নবী হজরত মোহাম্মদ সা. জন্মগ্রহণ করেন। পুর্ববর্তী সমস্ত আসমানি কিতাবে তার জন্ম প্রতিশ্রুত ছিল। সব যুগে আল্লাহর বান্দারা তার আগমনের প্রতীক্ষা করছিলেন। এজন্য দিনটি তার জন্মের আগে ও পরে সব সময় উম্মাহর
কাছে সবচেয়ে আগ্রহ ও আনন্দের মুহূর্ত। যে কারণে দুঃখের- একাদশ হিজরী’র রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে রাসুল (সা.) সর্বোচ্চ বন্ধু মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে পৃথিবী ত্যাগ করেন। যা আমাদের জন্য দুঃখ-কষ্ট ও বেদনার। রাসূলুল্লাহ সা. এর ওফাতে সাহাবীদের অবস্থা:
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিন মদিনায় প্রবেশ করছিলেন, সেদিন সেখানকার প্রতিটি জিনিস আলোকোজ্জল হয়ে পড়েছিল। অতঃপর যেদিন তিনি ইন্তেকাল করেন, সেদিন আবার তথাকার প্রতিটি বস্তু অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল।
আমরা তাঁর দাফনকার্য শেষ করে কবরের মাটি থেকে হাত ঝাড়া না দিতেই আমাদের অন্তরে পরিবর্তন অনুভব করলাম । (ইবনে মাজাহ, হা/১৬৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৫৭) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ রা. সম্পর্কে কথিত রয়েছে, তাঁকে যখন তাঁর পুত্র নবীপাকের
তিরোধানের শব্দ শোনালেন, তিনি তখন ক্ষেতে কাজ করছিলেন। ওফাতের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মর্মাহত হয়ে আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে ফরিয়াদ করলেন, ‘হে আল্লাহ! এখন তুমি আমার চোখের দৃষ্টি বিনষ্ট করে দাও। যাতে আমি আমার নবীর পরে আর কাউকে দেখতে
না পাই।’ আল্লাহপাক তৎক্ষণাৎ তাঁর দোয়া কবুল করেন। তাঁর দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। (আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়াহ)। হজরত উমর (রা.) রাসুল সা. এর ইন্তেকালে এত বেশি বিরহ-বিধুর হয়ে পড়লেন যে তিনি বলতে লাগলেন, ‘আল্লাহর কসম! রাসুল সা. মারা যাননি; তিনি তাঁর
রবের কাছে গিয়েছেন, যেভাবে গিয়েছেন হজরত মুসা ইবনে ইমরান আ.। ৪০ রাত তিনি নিজ সম্প্রদায় থেকে অনুপস্থিত ছিলেন। অবশেষে তিনি ফিরে এসেছেন। আল্লাহর শপথ! অবশ্যই রাসুল (সা.) ফিরে আসবেন। যারা বলবে রাসুল সা. ইন্তেকাল করেছেন, আমি তাদের হাত-পা
কেটে ফেলব।’ (সিরাতে ইবনে হিশাম : ২/৬৫৫)। রাসুল সা. এর ইন্তেকালে বিরহ-কাতর বেলাল রা. বললেন, ‘রাসুলুল্লাহ সা. বিহীন এ মদিনা আমি চাই না; রাসুল সা. এর স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোতে রাসুলবিহীন দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারব না।’ (আল কিরমানি, শরহুল বোখারি)।
অবশেষে তিনি সিরিয়ার হালিব নগরীর দিকে রওনা হলেন। প্রায় ছয় মাস পর তিনি স্বপ্ন দেখলেন, রাসুল সা. বললেন, ‘এ কী বেলাল! তুমি যে আমার সাক্ষাৎ এড়িয়ে চলছ! আমার সঙ্গে দেখা করতে তোমার মন চায় না?’ ঘুম থেকে জেগেই তিনি মাদিনা পানে ছুটে চললেন। মদিনায়
এসে রওজা মোবারকের চৌকাঠে নিজের মাথা রেখে অঝোর ধারায় কান্না করতে লাগলেন। আর বলতে লাগলেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! সুদূর হালিব শহর থেকে আমি এসে গেছি!’ এ কথা বলে তিনি বেহুঁশ হয়ে গেলেন। হুঁশ আসার পর নামাজের সময় ঘনিয়ে এলে সবার অনুরোধে
তিনি আজান দেন। তাঁর ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মদিনায় কান্নার রোল পড়ে যায়। তিনি যখন ‘আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ উচ্চারণ করেন, মদিনার সব মানুষ এমনকি নারীরাও নিজ নিজ গৃহ ত্যাগ করে বাইরে আসতে থাকেন। সবাই আপ্লুত হয়ে পড়েন। যেন
রাসুল সা.-এর যুগ ফিরে এসেছে, এ অনুভূতিই তাঁদের আবেগঘন করে তোলে। (ইবনে আসাকের)। ঈদে মিলাদুন্নবি প্রসঙ্গ: আজ ১২ রবিউল আওয়াল। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর জন্মদিন হিসেবে পরিচিত। এ দিনে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে এই রাসূল সাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের জন্ম বার্ষিকী পালন করে থাকেন।‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ অর্থ নবীর জন্ম উপলক্ষে খুশী বা নবীর জন্ম দিবসের উৎসব। আর ‘জশনে জুলূসে ঈদে মিলাদুন্নবী’ অর্থ জন্ম উৎসব উপলক্ষে বর্ণাঢ্য মিছিল করা। ১২ রবিউল আওয়াল রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম
বার্ষিকী পালন এবং এসব উৎসব ও অনুষ্ঠান করা হবে কি-না এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় সামনে রাখা যেতে পারে। ১. সপ্তম হিজরী শতকের আগে তার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। আর বাংলাদেশে তার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ১৯৭৪ সালে। সুতরাং সচেতন মমানুষ মাত্রই
বুঝতে সক্ষম হবে- ঈদ এ মিলাদুন্নবী এটা নব আবিস্কার। বিদয়াত। বিদ ২. রবিউল আওয়াল মাসে সোমবার সুবহে সাদেকের সময় রাসূলের জন্ম এ ব্যাপারে কারো দ্বীমত নেই। তবে ১২ রবিউল আওয়াল রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম তারিখ নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। এ
ব্যপারে রয়েছে ইখতেলাফ। কেউ ৮ রবিউল আওয়াল সোমবার। আবার কেউ ৯ রবিউল আওয়াল সোমবার। আবার কেউ ১২ রবিউল আওয়াল সোমবারের কথা বলেন। তবে মুহাক্কিক আলেমদের মতে ৮ রবিউল আওয়াল রাসূলের জন্মদিন। ৩. ১২ রবিউল আউয়াল রাসূল
সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মতারিখ কি-না এ নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও এ তারিখটি যে রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের তারিখ তা নিয়ে কোন মতবিরোধ নেই। অতএব যে তারিখটি রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের নিশ্চিত তারিখ, সে
তারিখ মুসলিম উম্মাহর জন্যে এক বেদনাময় স্মৃতি বিজড়িত তারিখ হতে পারে, আনন্দ বা উৎসবের নয়। তাহলে এদিনে উৎসব করা হবে অসঙ্গত ও অনুচিত।
৪.যদি মেনেও নেয়া হয়, ১২ রবিউল আওয়াল রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মতারিখ, তবুও ইসলামে জমদিবস বা মৃত্যদিবস; জন্ম বার্ষিকী, তাঁর মৃত্যু বার্ষিকী পালনের কোন নীতি রাখা হয়নি। তা মানুষের সৃষ্টি। স্বয়ং সাহাবায়েকেরামও রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
জন্মদিবস বা মৃত্যুদিবস পালন করেননি। যদি সাহাবায়েকেরাম রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবস পালন করতেন তাহলে রাসূলের জন্মতারিখ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ হওয়ার কোন অবকাশ ছিল না। সুতরাং আমাদের কর্তব্য হলো: রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর সীরাত মোবারক নিয়ে আলোচনা করা, কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত সমুদয় আদর্শই রাসূলের সীরাত। এবং নবীজি সা.এর ভালোবাসা ও আদর্শে উজ্জীবিত হওয়া। রবিউল আউয়াল মাসের বিশেষ আমল- (১) প্রিয় নবী সা.-এর অনুসরণে প্রতি সোমবার নফল রোজা রাখা, যা সারা
বছর রাখা যায়। (২) নবীজির প্রতি সর্বাধিক পরিমাণে দরুদ শরিফ পাঠ করা, যা সর্বদা করতে হয়। (৩) প্রিয় নবীজি সা. এর সুন্নতমতো জীবনযাপনে ব্রতী হওয়া, যার কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে নবীজি সা. এর আদর্শ অনুযায়ী চলার তাওফিক দান করুন। আমীন
Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram

Leave a Comment

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সকল শহীদদের স্মরণে প্রগ্রেসিফ ফোরামের শোক সভা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও নগদ অর্থ প্রদান

এইচ এম মাহমুদ হাসান- রাজধানী উত্তরায় ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তরার সকল শহীদদের স্মরণে উত্তরা ৩ নং সেক্টরস্থ শহীদ মুগ্ধ মঞ্চ প্রাঙ্গণে শোকসভা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও আহত ২ শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছে নগদ অর্থ প্রদান করেন প্রগ্রেসিফ ফোরাম উত্তরা। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর’২৪) বিকেল ৫টায় ড. প্রফেসর আবু রায়হানের সভাপতিত্বে

টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ইউএনও কে প্রত্যাহার

জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে বৈষম‌্যবি‌রোধী ছাত্র আন্দোল‌নে গু‌লি‌তে নিহত মারু‌ফের প‌রিবার‌কে অনুদান অনুষ্ঠা‌নে এক

ভুল নীতি-আদর্শের কারণেই দেশ বারবার সংকটে পড়েছে: মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘দেশের অরাজকতার পেছনে

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা দৌলতপুর থানা শাখার মাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত

এম শাহরিয়ার তাজ, খুলনা প্রতিনিধি:ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর এর আওতাধীন দৌলতপুর থানা শাখার মাসিক

  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৪:২৮ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০০ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:১৬ অপরাহ্ণ
  • রাত ১৯:৩১ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ