মোঃ নুরনবী শাওন,প্রেজেন্ট নিউজ –বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ জেলা ভোলা।প্রায় তিন হাজার পাঁচশত বর্গকিলোমিটারের এই জেলার ২০ লাখ মানুষ যেন জিম্মি হয়ে আছে জেলার একটি ছোট্ট বাস মালিক সমিতির কাছে।
গত ৬ই আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি করেন।সরকার নির্ধারিত সেই ভাড়ার তালিকাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।শুধু এখানেই শেষ নয়,নির্ধারিত আসনের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করছে।এসবের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই যেন জবাব দেওয়ার জন্য মুখিয়া হয়ে থাকে বাসের ড্রাইভার,হেল্পারসহ সংশ্লিষ্টরা।এ ভয়ে কেউ প্রতিবাদ ও করছে না।কথা কাটাকাটি থেকে হানাহানি,ভোলার রাস্তায় চলাচল করা যাত্রীদের জন্য যেন নিত্যদিনের ঘটনা।
এ ব্যাপারে যাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন,”এই বাস মালিক,ড্রাইভার,হেল্পার সবাই ডাকাত।ওদের ইচ্ছে মতই সব কিছু হয়।ভাড়া বেশি নেয়,যাত্রী বেশি নেই।ওরা বাড়া যা চায় তাই ই দেওয়া লাগে আমরা যদি কিছু বলি মুরুব্বি দেখেনা তার উপরই চড়া হয়”।
কেউ কেউ বলেন,”এ সমস্যা দুই এক মাসের না,দীর্ঘদিনের এই সমস্যা। উপরমহলের সবাই জানা সত্বেও এর এখনও কোন প্রতিকার হয়নি।আমরা এর সুস্থ প্রতিকার চাই”।
বাস মালিক সমিতির রাজত্বের এক অদ্ভুত নিয়ম।ঢাকা চট্টগ্রাম বা দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে ভোলায় যাওয়া সাধারণ যাত্রীরা বাস ব্যাতিত অন্য কোন বাহন (সিএনজি,অটো,মোটরসাইকেল) এ যেতে চাইলে তা পারেনা মালিক সমিতির নির্ধারিত ঠিকাদারদের জন্য।
মালিক সমিতির এই শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় সিএনজি,অটো ও মোটরসাইকেল চালকরাও।
এ বিষয়ে এক সিএনজি চালকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন”ভাই’আমাদের শক্তি নাই ওদের সাথে লড়ার।কোন যাত্রী যদি সিএনজিতে উঠতে চায় আমাদের কাছে আসে তাহলে ওরা এসেই আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করে।আমাদেরকে যাত্রী তুলতে দেয়না।ওদের সাথে লড়ার শক্তি নাই বলেই আমরা চুপ করে থাকি।লুকিয়ে লুকিয়ে দুই একটা ভাড়া যা পাই তা ই নিয়ে যাই”
মালিক সমিতির সিন্ডিকেটের তান্ডব এখানেই শেষ নয়।নিয়মানুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও তা নিতে নারাজ বাসের হেল্পার,ড্রাইভাররা।শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলেই গালমন্দ শুরু করেন তারা।এবং একটি স্টপেজে আসলেই তাদের গালমন্দ করার ভাষা যেন দ্বিগুণ বেড়ে যায়,গায়ে পরে জগড়া করতে চায় শিক্ষার্থীদের সাথে।কারন প্রতিটা স্টপেজেই রয়েছে মালিক সমিতির নির্দিষ্ট লোকজন।
নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরীতে করেও বাস ছাড়ার অভিযোগ রয়েছে।ফলে ক্লাসে সঠিক টাইমে উপস্থিত হতে পারেননা শিক্ষার্থীরা।
মালিক সমিতি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সাধারণ যাত্রীরা এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন এবং ভোলায় বিআরটিসি বাস চালু করার জোর দাবি জানান।