শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ রমজান, ১৪৪৫ হিজরি | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বসন্তকাল | বিকাল ৫:০৫

শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ রমজান, ১৪৪৫ হিজরি | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বসন্তকাল | বিকাল ৫:০৫

বিস্ময়কর মুসলিম বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram
  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০৮ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:২৮ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:১৫ অপরাহ্ণ
  • রাত ১৯:২৮ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৩ খ্রী.) বিশ্ব বিখ্যাত রসায়ন বিজ্ঞানী, আধুনিক রসায়ন বিজ্ঞানের জনক; নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিডের সর্বপ্রথম আবিষ্কারক, অংকশাস্ত্রবিদ ও বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী।

জাবির ইবনে হাইয়ান-এর পূর্ণ নাম হলো আবু আবদুল্লাহ জাবির ইবনে হাইয়ান। তিনি আবু মুসা জাবির ইবনে হাইয়ান নামেও পরিচিত। কেউ কেউ তাঁকে ‘আল হারারানী’ এবং ‘আবু সুফী’ নামেও অভিহিত করেন। ইউরোপীয় পণ্ডিতগণ তাঁর নাম বিকৃত করে জিবার (Geber) লিপিবদ্ধ করেন।

তিনি কবে জন্মগ্রহণ করেন তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় না। যতদূর জানা যায়, তিনি ৭২২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাইয়ান। আরবের দক্ষিণ অংশে জাবিরের পূর্ব পুরুষগণ বাস করতেন। তাঁরা ছিলেন আজাদ বংশীয়। স্থানীয় রাজনীতিতে আজাদ বংশীয়রা বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে জাবিরের পিতা হাইয়ান পূর্ব বাসস্থান ত্যাগ করে কুফায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিনি ছিলেন চিকিৎসক ও ঔষধ বিক্রেতা।

জানা যায়, উমাইয়া বংশীয় খলিফাগণের নিষ্ঠুর ও অমানবিক কার্যকালাপের দরুন হাইয়ান উমাইয়া বংশের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করতেন। সেহেতু তিনি পারস্যের কয়েকটি প্রভাবশালী বংশের সঙ্গে পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করবার জন্য আব্বাসীয়দের দূত হিসাবে কূফা ত্যাগ করে তূস নগরে গমন করেন। এ তূস নগরেই জাবিরের জন্ম হয়। হাইয়ানের ষড়যন্ত্রের কথা অতি শীঘ্রই তৎকালীন খলিফার দৃষ্টিগোচর হয়। খলিফা তাঁকে গ্রেপ্তার করে মৃত্যুদণ্ড দেন। হাইয়ানের পরিবার পরিজনদের পুনরায় দক্ষিণ আরবে প্রেরণ করেন।

দক্ষিণ আরবেই জাবির ইবনে হাইয়ানের শিক্ষালাভের কার্যক্রম শুরু হয়। শিক্ষালাভের প্রতি তার ছিল পরম আগ্রহ। যে কোন বিষয়ে বই পেলে তিনি তা পড়ে শেষ করে ফেলতেন এবং এর উপর গবেষণা চালাতেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি এখানে গণিতের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ পারদর্শী বলে খ্যাত হয়ে উঠেন।

শিক্ষা সমাপ্তির পর জাবির ইবনে হাইয়ান পিতার কর্মস্থল কূফা নগরীতে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি প্রথমে চিকিৎসা ব্যবসা আরম্ভ করেন এবং এ সূত্রেই তৎকালীন বিখ্যাত পণ্ডিত ইমাম জাফর সাদিকের অনুপ্রেরণায় তিনি রসায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণা শুরু করেন। কারো মতে জাবির ইবনে হাইয়ান খলিফা খালিদ বিন ইয়াজিদের নিকট রসায়ন বিদ্যা শিক্ষালাভ করেছিলেন।

কিন্তু এই কথার কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারণ জাবির ইবনে হাইয়ানের কার্যাবলীর ব্যাপ্তি ছিল খলিফা হারুন-উর রশীদের রাজত্বকালে। অথচ খলিফা খালিদ বিন ইয়াজিদ, হারুন-উর রশীদের বহু পূর্বেই ইন্তেকাল করেন। যতদূর জানা যায়, জাবির ছিলেন ইমাম জাফর সাদিকেরই শিষ্য। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রসায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিসাবে তাঁর সুখ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ছিলো আব্বাসীয় খলিফা হারুন-উর রশীদের রাজত্বকাল। কিন্তু খলিফা হারুন-উর রশীদের সাথে তার তেমন কোণ পরিচয় ও সাক্ষাৎ হয়নি। কিন্তু খলিফার বারমাক বংশীয় কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে তার গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। ইমাম জাফর সাদিকই জাবিরকে বারমাক বংশীয় কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।

একবার ইয়াহিয়া বিন খালিদ নামক জনৈক বারমাক মন্ত্রীর এক সুন্দরী দাসী মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তৎকালীন দেশের সুপ্রসিদ্ধ চিকিৎসকগণ তাঁর চিকিৎসা করে ব্যর্থ হন। এ সময় মন্ত্রী প্রাসাদে চিকিৎসার জন্য ডাক পড়ে জাবির ইবনে হাইয়ানের। জাবির মাত্র কয়েকদিনের চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলেন। এতে ইয়াহিয়া বিন খালিদ খুব সন্তুষ্ট এবং জাবিরের সাথে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।

বারমাক বংশীয় কয়েকজন মন্ত্রীর মধ্যস্থতায় তিনি রাষ্ট্রীয় কিছু সুযোগ সুবিধা লাভ করেন। এর ফলে তিনি রসায়ন বিজ্ঞান সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা করার সুযোগ পান। মন্ত্রী ইয়াহিয়া এবং তাঁর পুত্র জাবিরের নিকট রসায়ন বিজ্ঞান শিক্ষা শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য ও বিভিন্ন পদার্থ আবিষ্কার করতে আরম্ভ করেন। খুব অল্প দিনের মধ্যেই তিনি শ্রেষ্ঠ রসায়ন বিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিত হন। জাবির ইবনে হাইয়ান প্রতিটি বিষয়ই যুক্তির সাহায্যে বুঝবার ও অনুধাবন করার চেষ্টা করেছেন।

আধ্যাত্মিকতার দোহাই দিয়ে কোনো কাজে তিনি অগ্রসর হননি। তিনি সর্বদা হাতে কলমে কাজে করতেন। প্রতিটি বিষয়ে পুঙ্খানমুঙ্খ রূপে পর্যবেক্ষণ করে তার ফলাফল লিখে রাখতেন। তিনি তার ‘কিতাবুত তাজে’ পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘রাসায়নিকের সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কাজ হলো হাতে-কলমে পরীক্ষা চালানো। যে হাতে-কলমে কিংবা পরীক্ষামূলক কাজ করে না, তার পক্ষে সামান্যতম পারদর্শিতা লাভ করাও সম্ভব নয়।’

জাবির তার জীবনের অধিকাংশ সময়ই বাগদাদে কাটিয়েছেন। কিতাবুল খাওয়াসের ঘটনাবলী থেকে বুঝা যায় যে, অষ্টম শতাব্দীর শেষ দিকে বাগদাদেই তিনি রসায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে তার গবেষণা চালিয়েছিলেন। বাগদাদেই তার রসায়নাগার স্থাপিত ছিল। উল্লেখ্য যে, জাবিরের মৃত্যুর ১০০ বছর পরে কূফায় অবস্থিত দামেশ্‌ক তোরণের নিকট রাস্তা নতুন করে তৈরি করতে কতকগুলো ঘর ভেঙ্গে ফেলার সময় একটি ঘরে ২০০ পাউন্ডের একটি সোনার থালা ও একটি খল পাওয়া যায়। ফিহরিস্তের মতে, এটি ছিল জাবিরের বাসস্থান ও ল্যবরেটরি। ঐতিহাসিক হিট্টিও এ ঘটনার সত্যতা শিকার করেন।

জাবির ইবনে হাইয়ানের অবদান মৌলিক। তিনি বস্তু জগতকে প্রধানতঃ তিন ভাগে বিভক্ত করেন। প্রথম ভাগে স্পিরিট, দ্বিতীয় ভাগে ধাতু এবং তৃতীয় ভাগে যৌগিক পদার্থ। তার এ আবিষ্কারের উপর নির্ভর করেই পরবর্তী বিজ্ঞানীরা বস্তুজগৎকে তিনটি ভাগে ভাগ করেন। যথা বাষ্পীয়, পদার্থ ও পদার্থ বহির্ভূত।

জাবির এমন সব বস্তু বিশ্ব সভ্যতার সামনে তুলে ধরেন, যেগুলোকে তাপ দিলে বাষ্পায়িত হয়। এ পর্যায়ে আছে কর্পূর, আর্সেনিক ও অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড। তিনি দেখান কিছু মিশ্র ও যৌগিক পদার্থ; যেগুলোকে অনায়াসে চূর্ণে পরিণত করা যায়। নির্ভেজাল বস্তুর পর্যায়ে তিনি শনাক্ত করেন সোনা, রূপা, তামা, লোহা, দস্তা প্রভৃতিকে।

জাবির ইবনে হাইয়ানই সর্বপ্রথম নাইট্রিক এসিড আবিষ্কার করেন। সালফিউরিক এসিডও তার আবিষ্কার। তিনি ‘কিতাবুল ইসতিতমাস’-এ নাইট্রিক এসিড প্রস্তুত করার ফর্মুলা বর্ণনা করেন। নাইট্রিক এসিডে স্বর্ণ গলে না। নাইট্রিক এসিড ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মিশ্রণে স্বর্ণ গলানোর ফরমুলা তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন। নাইট্রিক এসিড ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মিশ্রণে স্বর্ণ গলানোর পদার্থটির নাম যে ‘একোয়া রিজিয়া’ এ নামটিও তার প্রদত্ত।

জাবির ইবনে হাইয়ান নানাভাবেই তার রাসায়নিক বিশ্লেষণ বা সংশ্লেষণের নামকরণ বা সংজ্ঞা উল্লেখ করেছেন। পাতন, উর্ধ্বপাতন, পরিস্রাবণ, দ্রবণ, কেলাসন, ভস্মীকরণ, গলন, বাষ্পীভবন ইত্যাদি রাসায়নিক সংশ্লেষণ বা অনুশীলন গবেষণার সময় পদার্থের কী কী রূপান্তর ঘটে এবং তার ফল কী দাঁড়ায়, তিনি তাও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি চামড়া ও কাপড়ে রঙ করার প্রণালী, ইস্পাত প্রস্তুত করার পদ্ধতি, লোহা, ওয়াটার প্রুফ কাপড়ে বার্নিশ করার উপায়, সোনার পানি দিয়ে পুস্তকে নাম লেখার জন্য লোহার ব্যবহার ইত্যাদি আবিষ্কার করেন।

জাবির ইবনে হাইয়ান স্বর্ণ ও পরশপাথর তৈরি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি স্বর্ণ কিংবা পরশপাথরের লোভী ছিলেন না। ধন সম্পদের লোভ লালসা তাকে সভ্যতা উন্নয়নে ও গবেষণার আদর্শ থেকে বিন্দু মাত্র পদস্খলন ঘটাতে পারেনি। দুর্দান্ত সাহসী জাবির ইবনে হাইয়ান স্বর্ণ ও পরশপাথর তৈরি করতে গিয়ে আজীবন যেখানেই গিয়েছেন দুর্যোগ, দুশ্চিন্তা ও মৃত্যুর সাথে লড়াই ছাড়া সুখ-শান্তির মুখ দেখতে পারেননি। জাবিরের মতে সোনা, রূপা, লোহা প্রভৃতি যত প্রকার ধাতু আছে, কোন ধাতুরই মৌলিকতা নেই। এসব ধাতুই পারদ আর গন্ধকের সমন্বয়ে গঠিত। খনিজ ধাতু খনিতে যে নিয়মে গঠিত হয় সে নিয়মে মানুষও ঐ সব ধাতু তৈরি করতে পারে। অন্য ধাতুর সংগে মিশ্র স্বর্ণকে Cupellation পদ্ধতিতে অর্থাৎ মীগারের সংগে মিশিয়ে স্বর্ণ বিশুদ্ধ করার পদ্ধতি তিনিই আবিষ্কার করেন।

জাবির এপোলিয়ানের আধ্যাত্মিকতাবাদ, প্লেটো, সক্রেটিস, এরিস্টটল, পিথাগোরাস, ডিমাক্রিটিস প্রমুখের গ্রন্থের সংগে পরিচিত এবং গ্রীক ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্র, ইউক্লিড ও আল মাজেস্টের ভাষ্য, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, রসায়ন, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও কাব্য সম্পর্কে বিভিন্ন গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। তিনি দুই হাজারেরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেন। তবে তার অধিকাংশ গ্রন্থই মাত্র কয়েক পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তিনি বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যা পেয়েছেন, সেসব ফলাফলই ছিল গ্রন্থের বিষয়বস্তু। বিভিন্ন বিষয়ে তার প্রণীত গ্রন্থাবলীর মধ্যে রসায়ন ২৬৭টি, যুদ্ধাস্ত্রাদি ৩০০টি, চিকিৎসা ৫০০টি দর্শন ৩০০টি, কিতাবুত তাগিদের ৩০০টি, জ্যোতির্বিজ্ঞান ৩০০ পৃষ্ঠার ১টি, দার্শনিক যুক্তি খণ্ডন ৫০০টি উল্লেখযোগ্য। এসব গ্রন্থ সংখ্যায় অধিক, তবে এগুলোর পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল কম।

বিশ্ব বিখ্যাত এ মনীষীর মৃত্যু তারিখ নিয়েও মতভেদ আছে। যতদূর জানা যায়, তিনি ৮০৩ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

জাবির ইবনে হাইয়ান-এর পূর্ণ নাম আবু আবদুল্লাহ জাবির ইবনে হাইয়ান। কেউ তাকে আল হারারানী এবং ‘আস্ সুফী’ নামেও অভিহিত করেন। তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও চিকিৎসা শাস্ত্র, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, রসায়ন, জ্যামিতি প্রভৃতি বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করেন।

বিজ্ঞানীর জীবনে অবিস্মরণীয় ঘটনা

জাবির ইবন হাইয়ানকে বলা হয় রসায়ন বিজ্ঞানের জনক। তাঁকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রসায়নবিদদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁর ‘কিতাবুস সুসুম’ (Book of Poison) বইটি আরব ঔষধবিজ্ঞানের অন্যতম উৎস।

গুপ্তবিদ্যার প্রতি মানুষের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। ‘আল-কেমি’ হচ্ছে সেই রকম গুপ্তবিদ্যা, যার দ্বারা মানুষ ‘এলিক্সির’ নামে একটি যাদুকরী বস্তু তৈরি করতে সক্ষম হবে। আর এই এলিক্সিরের ছোঁয়ায় লোহা হয়ে যাবে সোনা, তামা হয়ে যাবে রূপা, আর মানুষের আয়ু যাবে বহুগুণ বেড়ে! লোহা থেকে সোনা বানানো কিংবা জীবনকে দীর্ঘায়িত করার বাসনাই ছিল আল-কেমি বিদ্যার মূল উদ্দেশ্য। আল-কেমি বহু আগে থেকে চলে আসা একটি বিষয়, পৃথিবীর মানুষ লোহা থেকে সোনা বানানোর অসম্ভব চেষ্টা প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই করছে। আল-কেমি বিদ্যাটি কিছুটা গুপ্ত হওয়ায় জাবেরের বইগুলোও অনেকটা রূপক ভঙ্গীতে লেখা। আল-কেমি বিষয়ে লেখা তার বই ‘কিতাব আল জোহরা’-তে তিনি লিখেছেন, ‘আল্লাহ যাদের ভালবাসেন তারা ব্যাতীত বাকিদের হতভম্ব করা এবং ভুল পথে নেয়াই এর উদ্দেশ্য।’

আবার এই জাবিরই লিখেছেন, ‘আমার ‘মাস্টার’ আমাকে শাসাচ্ছেন, যাতে এসব বিদ্যা কোন অবিবেচকের হাতে না পড়ে।’ আল-কেমির বিদ্যা গুপ্ত রাখার মানসিকতায় তিনি এ সংক্রান্ত বইগুলো রূপকভাবে লিখেছেন সাধারণ যাতে সহজে সেসব বুঝতে না পারে।

আল-কেমির চর্চা ও অনুশীলন থেকে জাবির একসময় আবিষ্কার করলেন অনেক কিছু। তিনি আবিষ্কার করেন কী করে তরলের মিশ্রণ থেকে একটি তরলকে আলাদা করা যায়, যা ডিস্টিলেশন নামে পরিচিত। আবিষ্কার করেন একুয়া রেজিয়া নামে একটি মিশ্রণ যা সোনাকে গলিয়ে দিতে সক্ষম এবং উদ্ভাবন করেন অগুনতি কেমিক্যাল সাবস্ট্যান্স যা মরিচা প্রতিরোধ, স্বর্ণের কারুকাজ, পোশাকের ওয়াটারপ্রুফসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয়। আল-কেমি থেকে তিনি সিস্টেমেটিক এক্সপেরিমেন্টেশনের দ্বারা শুরু করেন আরেকটি বিষয়, যা পরিচিতি লাভ করে কেমেস্ট্রি হিসেবে।

তথ্যসূত্র-

উইকিপিডিয়া, মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on pinterest
Share on telegram

Leave a Comment

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

এইচ এম মাহমুদ হাসান-ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, দেশবিরোধী সকল আধিপত্যবাদী শক্তিকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে হবে। দেশ স্বাধীন হয়েছে দিল্লির গোলামির জন্য নয়; মাথা উঁচু করে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য। স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগের হাতেই আজ স্বাধীনতা ও দেশ বিপন্ন।

দিল্লির গোলামীর জন্য মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেনি-ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে

  • ফজর
  • যোহর
  • আসর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যদয়
  • ভোর ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ
  • দুপুর ১২:০৮ অপরাহ্ণ
  • বিকাল ১৬:২৮ অপরাহ্ণ
  • সন্ধ্যা ১৮:১৫ অপরাহ্ণ
  • রাত ১৯:২৮ অপরাহ্ণ
  • ভোর ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ